হাদীস: হযরত আবু হোযাইফা (রা) বলেন, একবার নবী করীম (সাঃ) দুপুরের সময় আমাদের কাছে তাশরীফ আনলেন। এমন সময় হুজুর (সাঃ) এর জন্য অযুর পানি নিয়ে আসা হলে রাসূল (সাঃ) অযু করলেন। অতঃপর লোকেরা রাসূলেপাক (সাঃ) এর অযু থেকে যে পানি বেঁচে গিয়েছিল উক্ত পানি নিয়ে শরীর মুছতে লাগলেন।
রাসূল (সাঃ) অযু শেষ করে দু’রাকাত যোহরের নামাজ এবং দু’রাকাত আছরের নামাজ আদায় করলেন। তাঁর নামাজের সম্মুখে সুতরা হিসেবে ‘আনজা’ নামক একটি ছোট লাঠি ছিল। বুযর্গ ব্যক্তিগণের ব্যবহৃত বস্তু বরকতের জন্য গ্রহণ করা জায়েয ও বৈধ।
হাদীস: হযরত আবু মূসা (রা) বলেন, একবার নবী করীম (সাঃ) পানি ভর্তি একটি পাত্র নিয়ে আসার জন্য বললেন। অতঃপর উক্ত পাত্রে রাসূলেপাক (সাঃ) নিজের হাত ও মুখমন্ডল ধৌত করলেন। এবং কুলি করলেন, তারপর তাদের উভয়কে অর্থাৎ আবু মূসা ও বেলালকে বললেন, তোমরা উক্ত পাত্র পানি পান কর এবং নিজের মুখমন্ডল এবং বুকে লাগাও।
পানির পাত্রে হাত দিয়ে অযু করা জায়েয:
হাদীস: হযরত ইযাহইয়া (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি আমর ইবনে আবি হাসান (রা) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা) কে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর অযু সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি একটি পাত্রে করে পানি আনবার জন্য বললেন। অতঃপর তিনি উক্ত পানি দ্বারা অযু করে দেখালেন। প্রথমে তিনি উক্ত পাত্রটি ঝাঁকায়ে হাতে এক কোষ পানি নিলেন, তা দিয়ে উভয় হাত তিন বার করে ধৌত করলেন।
অতঃপর তিনি নিজের হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকায়ে তিনবার তিন কোষ পানি দিয়ে কুলী করলেন, নাকে পানি দিলেন এবং নাক ঝেড়ে নিলেন। তারপর পুনরায় পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকায়ে তিন বার মুখমন্ডল ধৌত করলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকায়ে হাত ঝেড়ে মাথা মাসেহ করলেন।
মাথা মাসেহ করার সময় উভয় হাত একবার সম্মুখের দিকে আর একবার পিছনের দিকে নিয়ে আসলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকায়ে উভয় পা ধৌত করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর অযুর অতিরিক্ত পানি দিয়ে অজ্ঞান ব্যক্তির জ্ঞান ফেরান।
হাদীস: হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক সময় অসুস্থ হয়ে বেহুশ হয়ে পড়লাম। তখন রাসূলপাক (সাঃ) আমাকে দেখার জন্য এসেছিলেন। রাসূলেপাক (সাঃ) প্রথমে এসে অযু করলেন।
অতঃপর করার পর যে, অতিরিক্ত পানি ছিল তা আমার শরীরে ছিটিয়ে দিলেন, তাতে আমি জ্ঞান ফিরে পেলাম। অতঃপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার মৃত্যুর পর আমার সম্পদ কে পাবে? আমার ওয়াশিস তো অপরাপর ব্যক্তিগণ হবেন। অর্থাৎ পিতা- মাতা বা সন্তান-সন্ততি কেউই তো নেই। অতঃপর ফরায়েজের আয়াতসমূহ নাযিল হল।
খাওয়ার জন্য অযু নষ্ট হয় না:
হাদীস: হযরত সোয়াইদ বিন নোমান (রা) বলেন, আমরা খায়বার যুদ্ধে রাসূলেপাক (সাঃ) এর সাথে বের হলাম। যখন আমরা সাহবায় নামক স্থানে উপস্থিত হলাম তখন রাসূলেপাক (সাঃ) আমাদেরকে নিয়ে আসরের নামাজ আদায় করলেন। নামায শেষে খানা নিয়ে আসার জন্য বললেন। দেখা গেল ছাতু ছাড়া আর কিছুই নেই।
আমরা সবাই ছাতু খেলাম এবং পানি পান করলাম। অতঃপর তিনি মাগরিবের নামায পড়ার জন্য উঠলেন। কুলি করলেন, অতঃপর আমাদেরকে নিয়ে মাগরিবের নামায আদায় করলেন। রাসূলেপাক (সাঃ) মাগরিবের জন্য নতুন অযু করলেন না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / শাকিল আহমেদ মোহন
Leave a Reply