গোল্ড কে রসায়নের ভাষায় Au দিয়ে প্রকাশ করা হয়৷আর ইংরেজিতে তো সবার জানা। গোল্ডের মূল্য কতটুকু সেই প্রশ্ন করাটাই অবান্তর। কেননা,এই গোল্ডের জন্যই শত শত বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে আমাদের বর্তমান সমাজে। আর তা রবীন্দ্রনাথ খুব চমৎকার ভাবে তার ছোট গল্পে তুলে ও ধরেছেন। ৷ গোল্ডেন শব্দটা ই যেনো এক ধরনের আভিজাত্য বহন করে সে বিষয়ে কারো আপত্তি ও নেই ।
আমাদের দেশে স্বর্ণের খনি না থাকলে স্বর্ণের গ্রাম কিন্তু ঠিক ই আছে। অবাক হচ্ছেন কী? অবাক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা, এটা সত্যি । কুষ্টিয়ার ২৬ টি গ্রামকে একত্রে গোল্ডেন ভিলেজ বলা হয়৷ কেন বলা হয়, সে প্রশ্নের উত্তর শুনে গোল্ডেন শব্দটা খারাপ ভাবে দেখবেন না তো? কুষ্টিয়ায় ২৬ টি গ্রাম যে গ্রাম গুলোতে মাদক অর্থাৎ গাঁজা,ভাং উৎপাদন থেকে শুরু করে বিক্রির জন্য বিখ্যাত সে সকল গ্রামকে গোল্ডেন ভিলেজ বলা হয় । ভালো শব্দটা কেমন থেকে কেমন জানি হয়ে গেল তাই তো? হুম ঠিক ই ধরেছেন। একটা শব্দটার ব্যবহার কেমন হবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করে কে,বা কারা শব্দটাকে ব্যবহার করছে ৷
একই শব্দকে বিভিন্ন ভাবে বিকৃত করে থাকে অনেকেই। । সেটা ইসলাম ধর্মে হোক কিংবা অন্য ধর্মে হোক।প্রতিনিয়ত শব্দের ভালোটা দেখে আকৃষ্ট হলে ও পরে তা অসাড় সাগর হয়ে দ্বারায় । বর্তমান সমাজে , আজ আমরা ভালো শব্দের দিকে দ্রুত ছোট গিয়ে শুধু পেয়ে যাচ্ছি প্রতারণা । এক এক জনের মনোভাব এক এক রকম।পাগলের নিকট আগুন দেয়া হলে, সে আগুনের সদ্য ব্যবহার করতে পারবে কী?সে যেকোনো জায়গায় আগুন লাগাতে কুণ্ঠাবোধ করবে না। কিন্তু একজন বিবেকবান মানুষ সে আগুন দিয়ে আলো জ্বালানোর
চেষ্টা করবে অন্ধকার থেকে বাঁচার জন্য । এই ধরুন কানাডা আর উরুগুয়ে দুটো দেশ ই সমৃদ্ধিশালী। তারা গাঁজা কে সরকারী ভাবে বৈধতা প্রদান করেন। আমাদের দেশের মানুষের সেটাকে মারাত্মক অপরাধ হিসেবে জানে। তাহলে কি ঐদেশের মানুষের সকলের কাছে কি এটা স্বাকৃতি পেয়েছিল? হ্যাঁ অনেক এটাকে ঐদেশে ও অপরাধ হিসেবেই ধরেছিল। অপরাধ হিসেবে ধরুক কিংবা না ধরুক এদের সংসদ সদস্যদের কাছে বৈধতা পেয়েছে, কাজেই গোটা দেশের মানুষের কাছে বৈধতা পেয়েছে। তাহলে প্রশ্ন করতে ই পারি একটা শব্দকে নেগেটিভ কিংবা পজিটিভ নেয়ার জন্য আমাদের সমাজের মানুষ থেকে অবদান না রাখলে ও অবদান রাখে, সেদেশের সরকার ৷ যখন একটি দেশের গণতন্ত্রই থাকে না কিংবা খুন ধষর্ণ, আর দূর্নীতিতে ঘেরা ব্যক্তিরা একটি দেশের প্রধান হয় তখন কি ভাল শব্দের ভাল ব্যবহার পাওয়া যাবে? না তা কখনোই পাওয়া যাবে না। আমার একদিন (বস্তুর উর্ধ্বে মানব সত্তার প্রবক্তা) আল্লামা ইমাম হায়াতের একটা লেকচার শুনার সৌভাগ্য হয়েছিল। ওনার বক্তব্য টা ছিলো অনেকটা এরকম, যে যার দলমত,ধর্মীয় বিশ্বাস,আকিদা নিয়ে
চলবে। কেউ কারো উপর কারো বিশ্বাস মত,চাপিয়ে দেয়া পুরাটাই অন্যায়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাচাঁর অধিকার সকলেরই আছে । এছাড়া, মার্টিন লুথার কিং, ডেল কার্নেগী, এ পি জে আবুল কালাম ও তা আংশিক তোলে ধরেছেন তাদের বইগুলোতে। এখন কিং জন উন যখন রাজনৈতিক ভাবে ক্ষমতায় থাকে তখন এই উক্তিগুলো বলার সাহস কেউ আপনি রাখেন? যখন ডোনাল ট্রাম্প মানবতা শেখায় মনে মনে হাসি পেলে ও সামনে জি হুজুর বলে স্বীকৃতি জানাতে বাধ্য গোটা পৃথিবী । কিন্তু প্রায় সকল দেশের সংবিধান মানুষের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।কিন্তু তার প্রকৃত ব্যবহার আজ বর্তমান পৃথিবীতে নেই। বিশ্বের ভাল শব্দকে ভাল রূপে কাজে লাগাতে পারে একমাত্র মানবতার রাজনীতি। যে রাজনীতিতে থাকবে না কোনো দ্বন্দ্ব, থাকবে না অরাজকতা,থাকবে কোনো
প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ, দূর্ণীতির শেকড় উপরে যাবে সমাজ থেকে। সকল মানুষ তার দল মত আর্দশ নিয়ে চলতে পারবে। সে রাজনীতির জন্য আজ বিশ্ব আকাঙ্ক্ষিত , আজ হাহাকার করছে মানবতা। অপেক্ষা গোটা বিশ্ব কখন উত্থান হবে মানবতার রাজনীতি। গোল্ডকে গোল্ড হিসেবে জানবে তারা ৷ চেতনার বিষবৃক্ষ থেকে মুক্ত হবে গোটা বিশ্ব, কখন শেষ হবে জাতিয়তাবাদী উন্মেষের নামে জাতিকে আলাদা করার চিন্তা৷ ভালো একটি শব্দকে পুজিঁ করে নিজের সুঁজি খাবার চিন্তায় মগ্ন থাকা স্বার্থান্বেষীদের শেকড় উপরে দিতে হবে পৃথিবী থেকে । তবেই ধোঁকার রাজ্য থেকে পরিত্রাণ পাবে এই বিশ্ব।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply