লিওনেল মেসি। এক ফুটবল জাদুকরের নাম। মাঠে ফুটবল নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন বহুবার। বার্সেলোনার জার্সিতে প্রায় সব শিরোপাই জিতেছেন তিনি। এ ছাড়া ব্যক্তিগত সাফল্যের স্মারক তো আছেই তাঁর শোকেসে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে যৌথভাবে জিতেছেন সর্বোচ্চ পাঁচটি ব্যালন ডি’অর। আর বার্সেলোনার জার্সিতে জিতেছেন ৩২টি শিরোপা।
কিন্তু আর্জেন্টিনার জার্সিতে কী পেলেন তিনি? জাতীয় দলের হয়ে মেসির গল্পটা যে শুধুই হাহাকারের।
এখন মনে করা হচ্ছে, আর্জেন্টিনার জার্সিতে বড় শিরোপা জিতবেন—মেসি হয়তো এমন আশাও ছেড়ে দিয়েছেন। ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য জানাতে গিয়ে মেসি যে একবারও তাঁর দেশের নামটি মুখে তোলেননি! যা বলেছেন তার পুরোটাজুড়েই শুধু ক্লাব।
ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষক অ্যাডিডাসের প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানে নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা বলেছেন মেসি, ‘আরও উন্নতি করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। যা জিতেছি, সেসব নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চাই না।’ দেশের হয়ে মেসি অলিম্পিক স্বর্ণ ছাড়া মেসি আর বড় কোনো শিরোপা জিততে পারেননি, যা কিছু জিতেছেন কিংবা অর্জন বলতে মেসি যে বার্সার সাফল্য বুঝিয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য। কারণ, মেসির ক্যারিয়ারের সিংহভাগ সাফল্য কাতালান ক্লাবটির হয়ে।
সাফল্যের এই ধারা ধরে রাখার প্রত্যয়ও জানালেন আর্জেন্টাইন তারকা, ‘আমি প্রতিদিন উন্নতি এবং আরও শিরোপা জিততে চাই। নিজেকে ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলেই মনে করি। সবকিছু জিততে চাই এবং হারতে মোটেও ভালো লাগে না।’
ক্যারিয়ারের শুরুতে শুধু গোল করাই লক্ষ্য ছিল মেসির। ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে পরিণত করেছেন ১০ নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে। যিনি গোল করার সঙ্গে গোল বানানো আর খেলা তৈরিতেও সিদ্ধহস্ত। বার্সার মেসিকে কিন্তু এই ভূমিকাতেই সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। আর্জেন্টিনার মেসি একই পজিশনে দলের প্রাণভোমরা হিসেবে খেললেও বলার মতো তেমন সাফল্য পাননি। এই পজিশনে তিনি নিজেকে আরও ধারালো করার কথাই জানালেন, নিজেকে গোলদাতা ভাবার চেয়ে একজন খেলোয়াড় হিসেবে দেখি, যে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করবে, খেলা বানাবে এবং এভাবে আরও উন্নতি করবে।
আর্জেন্টিনাকে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছিলেন মেসি। এ ছাড়া দেশকে তিনবার নিয়ে গেছেন কোপা আমেরিকার ফাইনালেও। কিন্তু শিরোপা ধরা দেয়নি। সর্বশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপেও সাফল্যের মুখ দেখেননি মেসি। শেষ ষোলো থেকেই ছিটকে পড়েছে আর্জেন্টিনা। হতাশ মেসি এরপরই জাতীয় দল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবসরে। তাঁর ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের খেরোখাতায় আর্জেন্টিনা নিয়ে কিছু না থাকাটা সম্ভবত হতাশা থেকেই। প্রাণপণ লড়েও সাফল্য না পাওয়ার হতাশা।
এই হতাশা তার বুটজোড়া তুলে রাখার সময়ও কি তার পাশেই থাকবে? নাকি, কোনো একদিন সুযোগ পেয়ে যাবেন শিরোপা খরা কাটিয়ে ওঠার? সময়ই দেবে সে উত্তর।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ সাহাজুল ইসলাম
Leave a Reply