বর্তমান বিশ্বে তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থান ও উপার্জনের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম- আউটসোর্সিং। যে মাধ্যমে আয়ের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। গেল বছর ফ্রি ল্যান্সাররা আয় করছেন প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার। অথচ একদশক আগেও এ খাতের দৃশ্যমান কোন কিছু ছিলনা।
তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রি ল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণও বাড়ছে। প্রতি বছরই ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের বছরের প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি আয়ও। তবে এগিয়ে চলার পথে বড় বাধা ইন্টারনেট ব্যবহারে উচ্চমূল্য ও ধীরগতি। এছাড়া রয়েছে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা। এসব অভিযোগ তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টদের। তবে সমস্যার কথা স্বীকার করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সঠিক পথেই এগুচ্ছে বাংলাদেশ।
প্রযুক্তিবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো যে গতির কথা বলে সেটা অনেক সময় নিজেদের জাহির করার জন্য। অনেক জায়গায় এখনও থ্রিজি নাই। ইন্টারনেটের গতি যদি আমরা না বাড়াই তাহলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক পিছিয়ে যাবো।’
বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি। ইন্টারনেটের হাত ধরে ই-কমার্স বাণিজ্য ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকার অংক। গেল ৫ অর্থবছরে সফটওয়্যার রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে না ইন্টারনেটের গতি।
এদিকে বেসিসের সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আমরা কোন কোন সময় দেখেছি যে, ৬২৫ টাকার ড্যাটা তারা লাখ লাখ টাকায় বিক্রি করে।’
আইসিটি খাতে ২০০৯ সালে ১শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরে ১১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হচ্ছে ২৮টি হাইটেক পার্ক। যদিও উদ্যোক্তাদের অভিযোগ হাইটেক পার্কের অবকাঠামো নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ছে।
মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘যশোরে হাইটেক পার্কটা সরকার করেছে এবং সরকার সেখানে মাত্র দশ টাকা বর্গফুটে আমাদের জায়গা দিচ্ছে। কিন্তু কালিয়াকৈরে যখন আমি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যাবো তখন হয়তো এই দাম সাত থেকে আটগুণ বেশি হয়ে যাবে।’
২০২১ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার। সেই পথে চলতে তথ্য-প্রযুক্তিখাতের বাজার ধরতে মোবাইলে ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করা দেয়ার কথা জানালেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘মোবাইল ফোনে কল রেটটা যেভাবে করা হয়েছে সেভাবে ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও একটা সর্বোচ্চ সীমা থাকা দরকার। বিটিআরসিকেও আমরা এটা করতে কয়েকবার বলেছি।
এছাডাও অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, Digital Marketing Solution (Ptv.) Ltd এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ওমর সানি বলেন, “ইন্টারনেটের গতি যদি না বাড়ে এবং ইন্টারনেট সেবার মূল্য যদি সহজলভ্য না হয়, তাহলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক পিছিয়ে যাবো” ।
২০২১ সাল নাগাদ তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১০ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে চায় সরকার। যার মধ্যে ৩ লাখ কর্মসংস্থান হবে দেশের ২৮টি হাইটেক পার্কে। প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন হলে একদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যেমন রপ্তানি আয় বাড়বে অন্যদিকে কমবে মেধা পাচার-এমনটাই মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / কাউসার।
Leave a Reply