দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসা এবং নতুন করে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামছে বিএনপি। ঈদুল আজহার আগেই দেশের ৮ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
সূত্র জানায়, চলতি মাসে চট্টগ্রামে ও খুলনা ছাড়া রাজশাহী এবং বরিশাল বিভাগেও সমাবেশ করার প্রস্তুতি চলছে। রাজশাহী ও বরিশালে এ মাসের শেষ সপ্তাহেই সমাবেশ হতে পারে। বাকি চার বিভাগীয় শহরে ঈদের আগেই তারিখ নির্ধারণের জন্য কেন্দ্র থেকে স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনাতে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ঢাকায় সমাবেশ হবে সবার পর। অনুমতি পেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশের আয়োজন করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর দল পুনর্গঠনের কাজে মনোযোগ দেয় বিএনপি। যে কারণে গত ছয় মাসে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেয়নি দলটি। কেন্দ্রীয়ভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে শুধু মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে বড় ধরনের কর্মসূচি না দেয়ায় এ নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা আগামী ঈদের আগেই ৮ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করব। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিভাগে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুর- এই ৮ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে বিভাগীয় স্থানীয় নেতারা তাদের সুবিধা অনুযায়ী সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা আশা করছি এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঝিমিয়ে পড়া তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবার চাঙ্গা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চান তারা। পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাবেন। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে শিগগিরই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।
রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, সমাবেশ করার জন্য ইতিমধ্যে রাজশাহী মহানগর নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। চলতি মাসের শেষে যে কোনো একদিন সমাবেশ হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাশেম বকর বলেন, ২০ জুলাই আমরা সমাবেশ করব। ইতিমধ্যে লালদীঘির ময়দানের অনুমতি চেয়ে প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। সেখানে অনুমতি না পেলে জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর অথবা কাজীর দেওড়ির মোড়ে সমাবেশ করব। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ২৫ জুলাই আমরা সমাবেশ করছি। ইতিমধ্যে নগরের হাদিস পার্ক, সোনালী ব্যাংক চত্বর ও শিববাড়ীর মোড়- এই তিনটি ভেন্যুর যে কোনো একটি চেয়ে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা, নতুন জাতীয় নির্বাচনের দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এই সমাবেশ হবে।
ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, সব শেষে ঢাকা বিভাগীয় শহরে সমাবেশ হবে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হবে।
Leave a Reply