জাতি-ধর্মের অনেক উপরে ভালবাসার স্থান। ধর্ম নিয়ে সকল বিবাদের ঊর্ধ্বে উঠে প্রিয়জনের প্রাণ বাঁচাতে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলো মহারাষ্ট্র ও বিহারের দুই পরিবার। হিন্দু-মুসলমান দুই পরিবারের দুই ব্যক্তির স্ত্রী কিডনি দান করলেন একে অপরের স্বামীকে।
মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই কিডনি প্রতিস্থাপনের ঘটনা ঘটেছে। হিন্দু মহিলার কিডনি পেয়েছেন এক মুসলমান পুরুষ। আর মুসলমান মহিলার কিডনিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন এক হিন্দু ব্যক্তি। দু’জনেই একই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
জানা গেছে, বিহারের বাসিন্দা ৫৩ বছরের রামশরথ যাদব গত কয়েকবছর ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এদিকে মহারাষ্ট্রে বসবাসকারী ৫১ বছরের নাদিম পটেলেরও কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছিল। দুজনেরই হাসপাতালে ডায়লিসিস চলছিল। কিন্তু তাতে স্বাস্থ্যের বিশেষ উন্নতি হচ্ছিল না। তার পরেই চিকিৎসকেরা দু’জনকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। গোল বাঁধে তখনই। কিছুতেই প্রয়োজনীয় কিডনি পাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর মহারাষ্ট্রের ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে দেখা যায় যে রামশরথের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে নাদিমের স্ত্রী নাজরিনের গ্রুপ মিলে যাচ্ছে। সেই রকম ভাবেই রামশরথের স্ত্রী সত্যদেবীর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিলছে নাদিমের রক্তের গ্রুপ।
গোটা পরিস্থিতি লক্ষ্য করে এরপরে হাসপাতালের চিকিৎসকেরাই ওই দু’জনের পরিবারের কাছে অনুরোধ করেন যে যদি তারা একে অপরের স্বামীকে কিডনি দান করেন। তবে দু’জনের জন্যই ভাল হবে সেটি। অঙ্গদান আইনানুযায়ী পরিচিত বা নিকটাত্মীয়রা ছাড়াও এ ভাবেও পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে কিডনি বদল করা যেতে পারে। সেই নিয়মেই এখানে এই পারস্পরিক কিডনি দান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেই এই কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করা হয়। রোগীরা সকলেই ভাল আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply