ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং অযোগ্যতার কারণে এ কমিটি ভেঙে দেয়ার কথাও বলেছেন। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দলের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভার সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন আওয়ামী লীগের নেতা জানান, উপজেলার প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে আয়োজিত সভায় ছাত্রলীগের প্রসঙ্গ তোলেন নেত্রী। সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। বিশেষ করে তারা দুপুরের আগে ঘুম থেকে ওঠে না।’ এসময় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে পৌঁছার পর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুষ্ঠানে যান। সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদকেও তারা বসিয়ে রেখেছেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের সম্মেলনের দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও কমিটি দিতে না পারা, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি করার বিষয়ে অনৈতিক অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনেক বিতর্কিত, বিবাহিত ও জামায়াত-বিএনপি সংশ্লিষ্টদের পদায়ন করার বিষয়ে এ সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
আরও জানা গেছে , এসময় সভায় ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বাদ পড়াদের অনশনের কথাও তোলেন দুজন নেতা। প্রায় দশ মিনিট ধরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এ সভায় আলোচনা হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দেন বলেই জানিয়েছে ওই সভার সূত্র।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী কমিটি ভেঙে দেয়ার কথা বলেছেন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা।
সভায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।’
ডাকসু নির্বাচনের কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিএম মোজাম্মেলকে ছাত্রলীগ দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন। আওয়ামী লীগের পরামর্শ ও নির্দেশনায় সংগঠনটি চলে।
শনিবার সভা চলাকালে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করলেও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছর মেয়াদি কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply