তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের দাপুটে শতকে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে স্বাগতিক বিসিবি একাদশ।
৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইমরুল কায়েসের সাথে তামিম ইকবাল উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন ৮১ রান। কায়েস ২৫ বলে ২৭ রান করে আউট হলে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে স্বাগতিকদের।
তবে এতে বিন্দু মাত্র চাপে ভোগেনি বিসিবি একাদশ। তার কারণ তামিম ইকবালের রাজসিক ব্যাটিং। প্রত্যাবর্তন ম্যাচে ৭ চার ১ ছয়ে অর্ধশতক পূর্ণের পর ৭৩ বল খেলে ১০৭ রান করেন তামিম। ১৩ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে চেজের বলে স্টাম্পড হলে দলীয় ১৯৫ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয় স্বাগতিকদের।
তামিম ফিরে গেলেও তার আগেই ম্যাচ জয়ের ভিত ততক্ষণে স্বাগতিকদের গড়ে দিয়ে যান তিনি। সৌম্য ও তামিমের ১১৪ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ক্রিজে এসে থিতু হতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুন। ১৪ বল মোকাবেলায় ৫ রান করে সাজঘরে ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
তবে তাতে মুন্ডুপাত না করে সাবলীল গতিতে এগিয়ে যেতে থাকেন সৌম্য। সাথী হিসেবে আরিফুল হকের ক্রিজে যোগ দেওয়ার পর তুলে নেন অর্ধশতক। নিজে সাবলীল গতিতে খেলতে থাকলেও ক্রিজের অন্য পাশে আচমকাই শুরু হয় উইকেট পতন। ২ ছক্কায় ১৮ রান করা আরিফুলের ক্যাচ বিশু নিজের বলে নিজে নিলে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে বিসিবি একাদশের।
এরপর রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফিরেন তৌহিদ হৃদয়। ফলে ২৩৪ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে ঘরের দলটি। শামীম পাটোইয়ারিকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩১ রান যোগ করার পর ৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। যার ফলে ২৬৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বিসিবি একাদশ। আর ম্যাচ মোড় নেয় নাটকীয়তায়।
তবে এখানেই সবকিছু শেষ হয়ে যেতে দেননি সৌম্য ও মাশরাফি। সপ্তম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে দলকে ফেরান জয়ের ট্র্যাকে। মাশরাফির যোগ্য সমর্থনে শতক পূর্ণ করেন সৌম্য সরকার। ৭৭ বল মোকাবেলায় ৭ চার আর ৬ ছক্কায় কাঙ্ক্ষিত মাইলফলকের দেখা পান তিনি। সৌম্য করেন ১০৩ রান।
সৌম্যর শতক পূর্ণের পর বিসিবি একাদশের সংগ্রহ যখন ৪১ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ৩১৪ রান তখন আলোক-স্বল্পতায় ডি/এল মেথডে স্বাগতিকদের ৫১ রানে বিজয়ী ঘোষণা করে ম্যাচ অফিসিয়ালরা। শেষ পর্যন্ত ৮৩ বল মোকাবেলায় ৭ চার ও ৬ ছয়ে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন সৌম্য। তার তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ১৮ বল খেলা মাশরাফি ২ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২২ রানে।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেটের বিনিময়ে স্বাগতিদের বিপক্ষে ৩৩১ রানের পুঁজি পেয়েছে সফরকারীরা। উইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৮ রান এসেছে শাই হোপের ব্যাট থেকে।
স্বাগতিক বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট লাভ করেছেন নাজমুল ইসলাম অপু ও রুবেল হোসেন। তাছাড়া বাকি বোলারদের মধ্যে মাশরাফি, রানা ও শামীম প্রত্যেকেই নিজেদের প্রাপ্তির খাতায় জমা করেছেন একটি করে উইকেট।
উইন্ডিজ: ৩৩১/৮ (৫০ ওভার)
পাওয়েল ৪৩(৪৮), হোপ ৭৮(৮৪), ব্রাভো ২৭(৩৩), স্যামুয়েলস ৫(১২), হেটমায়ার ৩৩(২৭), পাওয়েল ০(৫), চেজ ৬৫*, অ্যালেন ৪৮, রুবেল ১০-০-৫৫-২, মাশরাফি ৮-১-৩৭-১, রানা ১০-০-৬৫-১, শাহিন ২-০-১৮-০, সৌম্য ৮-০-৭২-০, অপু ১০-০-৬১-২, শামীম ২-০-১৬-১।
বিসিবি একাদশ: ৩১৪/৬ (৪১ ওভার)
তামিম ১০৭(৭৩), কায়েস ২৫(২৭), সৌম্য ১০৩(৮৩)*, মিঠুন ৫(১৪), আরিফুল ২১(১৮), হৃদয় ০(৫), শামিম ৯ (১২), মাশরাফি ২২(১৮)*; চেজ ৫৭/২।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply