বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে আজিম (২৫) নামের এক যুবক খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. বিপ্লব মোল্লা (২৫), তার স্ত্রী রিনা বেগম (২০) ও তার কিশোর শ্যালক। তাদের বাড়ি পাবনার সদর উপজেলার মিনদাহ গ্রামে। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী উপজেলার ছোট চরকাঠি গ্রামে মাটির নিচে পুঁতে রাখা নিহত আজিমের দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত আজিম সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলার কাউকান্দি গ্রামের মো. মনজুল হকের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন।
সোমবার দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়। পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, মূলত দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে জামাইকে হত্যা করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এক বছর আগে শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে হত্যার শিকার হন আজিম। তাকে কচুয়া উপজেলার ছোট চরকাঠি গ্রামে বসে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে তার লাশ গুম করতে বাড়ির পাশে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতার তিনজন। এ ঘটনায় কচুয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল হাসান বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, কচুয়ার এ হত্যার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের একাধিক দল তদন্তে নামে। প্রথমে সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মাটির নিচে থেকে হত্যার শিকার আজিমের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নিহতের স্ত্রী রুবিনা বেগম পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজের সূত্রে সুনামগঞ্জের আজিমের সঙ্গে বাগেরহাটের কচুয়ার রুবিনার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেম হয়। এক সময় তারা বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তাদের বনিবনা হচ্ছিল না। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লাগত। বিরোধ মেটাতে বিভিন্ন সময়ে আত্মীয়-স্বজনেরা সালিস বৈঠক করে। এরপরও বিরোধ না মেটায় আজিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী রুবিনা বেগম ও তার স্বজনেরা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আজিমকে ঢাকা থেকে বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসার দাওয়াত দেয়া হয়। আজিম শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে ওই দিন আজিমের ছোট ভায়রা বিপ্লব, শ্যালিকা রিনা ও কিশোর শ্যালক খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে লাঠি দিয়ে মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তাকে হত্যা করে আসামিরা। পরে তার লাশ গুম করতে বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে বাগানে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়। বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। সোমবারই তাদের আদালতে নেয়া হয়েছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply