‘আমি লাশ হয়ে গেলে নিরাপত্তা নিয়ে কী করব? নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী শুধু সরকারদলীয় মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া? অন্য কোনো দলের মানুষ কি বাংলাদেশের জনগণ নয়?’ সংবাদ সম্মেলন করে এসব প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
সিরাজগঞ্জ জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে নিরাপত্তা না পেয়ে জীবননাশের আশঙ্কায় নিজ নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর) ছেড়ে পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়ায় আশ্রয় নিয়েছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও বিশিষ্ট কন্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
তিনি সোমবার দুপুরে বগুড়া পর্যটন মোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কনকচাঁপা অভিযোগ করেন, তাঁকে ফোনে এবং বিভিন্নভাবে তাঁর নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি (রিটার্নিং কর্মকর্তা) বলেছেন, হুমকি-ধমকির তো কোনো প্রমাণ নেই। কিছু ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কারা হুমকি দিচ্ছেন জানতে চাইলে কনকচাঁপা সুনির্দিষ্টভাবে কারও নাম উল্লেখ করেননি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন কনকচাঁপা।
তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সিরাজগঞ্জে আসেন কনকচাঁপা। সেদিন থেকেই গণসংযোগের জন্য নির্বাচনী এলাকা কাজীপুরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিভিন্নভাবে নানা রকম হুমকি, ভয়ভীতি সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি নেতা-কর্মীদের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে তাঁদের। অজ্ঞাত লোকজন দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণার জন্য ঢুকতে তাঁকেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
কনকচাঁপা বলেন, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকেই কালো রঙের একটি জিপ তাঁকে অনুসরণ করে। প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক তাঁকে অনুসরণ করে গাড়িটি। একপর্যায়ে সন্দেহ হলে কনকচাঁপা তাঁর গাড়ি থামান। এ সময় ওই জিপও তাঁর গাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায়। এমন পরিস্থিতি দেখে কনকচাঁপা তাঁর গাড়ি ঘুরিয়ে নেন। পরে ওই গাড়িটি ঘুরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর গাড়ি নিয়ে কৌশলে আত্মগোপন করেন কনকচাঁপা।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘এত দিন নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এতেও তাঁরা ক্ষান্ত হচ্ছিল না। পরে তাঁর গাড়ি অনুসরণ করা হয়েছে। এটা কী আমাকে গুমের লক্ষণ?
কনকচাঁপা আরও বলেন, অন্য প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে তো বিধি-নিষেধ নেই। ধানের শীষে ভোট চাওয়ার জন্যই গণসংযোগ করা। কিন্তু সেই অধিকারও মনে হচ্ছে নেই। ভোটে দাঁড়িয়ে তাঁকে দাদার বাড়িতেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁর।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন, কোনো কিছু ঘটলে তাঁকে জানাতে হবে। তাহলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
এসব অভিযোগের নিয়ে বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করা কেন?—জানতে চাইলে কনকচাঁপা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে তো আমাকে বাঁচতে হবে। জীবননাশের ভয়ে রোববার সন্ধ্যায় কাজীপুরের লক্ষ্মীপুর যাওয়া সম্ভব হয়নি। কৌশলগত কারণে বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করা হচ্ছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply