বাংলাদেশে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচন ভারসাম্যহীন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ২০১৮ সালের বিশ্বব্যাপী বার্ষিক মানবাধিকারের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বাংলাদেশের নির্বাচনকে এমন মূল্যায়িত করা হয়।
মাইক পম্পেও প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। এতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমালোচনা করা হয়। প্রতিবেদনটিতে বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের সমালোচনা করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশগুলোর সরকার দ্বারা হয়রানি, ভয়ভীতি, নির্বিচার গ্রেফতারের সমালোচনা করা হয়।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ভোটের ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেন। তবে এ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়নি।
ওই প্রতিবেদনে ডিসেম্বরের নির্বাচনকে অসম্ভব ভারসাম্যহীন নির্বাচন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি স্বাধীন এবং উন্মুক্ত নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনে বিরোধী দলের পুলিং এজেন্ট ও ভোটারদের হুমকি এবং ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, হয়রানি, ভয়ভীতি, নির্বিচার গ্রেফতার এবং সহিংসতার কারণে বিরোধী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের স্বাধীনভাবে সভা-সমাবেশ ও প্রচার-প্রচারণা চালানো বাধাগ্রস্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে। নির্বাচন ছাড়াও এ প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন, বাক স্বাধীনতায় বাধা দেয়া, দুর্নীতি এবং এনজিও বিষয়ক আইনে থাকা ‘অতিরিক্ত কড়াকড়িকে’ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বার্ষিক প্রতিবেদনটি প্রস্তুতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এতে উপস্থাপিত তথ্য মার্কিন কংগ্রেস, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ প্রামাণিক হিসেবে গ্রহণ করে। কোনও দেশকে সহায়তা দেয়া না দেয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করা না করার মতো বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ প্রতিবেদনে উপস্থাপিত তথ্য বিবেচনায় নেয়া হয়।
প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে বেসামরিক প্রশাসন নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ওপর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পেরেছে। কিন্তু একইসঙ্গে তাদের দেয়া হয়েছে ব্যাপক মাত্রার দায়মুক্তি। নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার ও তাদের দ্বারা সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের তদন্ত ও দায়িদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে সরকার খুব কম পদক্ষেপই গ্রহণ করেছে।
বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর বিশেষভাবে চীন ও ইরানের নাম উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, তবে বহু শক্তিশালী ও সার্বভৌম দেশ থাকা এ বিশ্ব টেকসই স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের মার্কিন স্বার্থ তখনই নিশ্চিত হবে যখন সরকারগুলো মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply