বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সকল জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের নিকট জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের খোলা চিঠি… প্রিয় সুহৃদ, শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানবেন। পবিত্র মাহে রমযান সমাগত। দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার মাঝে ৩য় গণমাধ্যম সপ্তাহ-২০১৯ সম্পন্নের পথে। ৭ মে পহেলা রমযান। ১-৭ মে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ। এবছর ৭ মে পবিত্র মাহে রমযানের শুরু। তাই ৭ মে’র জাতীয় সমাবেশের সময় পরিবর্তন করা হ’ল। প্রতিবছরের ১-৭ মে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ বিগত দু’বছর সারাদেশের সাংবাদিকরা উদযাপন করে আসছেন। এবারের ৭দিনের কর্মসূচীর শেষদিন জাতীয় সমাবেশ পবিত্র মাহে রমযানের কারনে সময় পরিবর্তন করে ২২ জুন ধার্য্য করা হয়েছে।
গণমাধ্যম সপ্তাহ উপলক্ষে জেলা/উপজেলায় চলছে নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচী। চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে আপনার শাখার কমিটির তালিকা কেন্দ্রে পাঠালে তা সংরক্ষন এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এ সকল বিষয়াদি নিয়ে আগামি ১৫ জুন সোমবার জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিকদের নিয়ে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুরোধক্রমে সকলকে আহবান করা যাচ্ছে। মিট দ্যা প্রেসে বিএমএসএফ’র চৌদ্দ দফা দাবি এবং ‘গণমাধ্যম দিবস’কে সপ্তাহে রুপান্তর করার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে স্পষ্ট মতামত গ্রহন করতে পারেন। ১৪ দফা দাবির লিফলেট বিতরণসহ পূরো বর্ষাকাল জুড়ে চলবে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী।
প্রিয় সহযোদ্ধা, আপনার এলাকায় সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনাতো ঘটছেই। জানামতে আপনার কর্ম এলাকায় হয়রাণী, লাঞ্ছিত, হামলা-মামলা, ক্ষতিসাধনের শিকার সাংবাদিকের তথ্য পাঠালে কৃতজ্ঞ থাকবো। প্রতিবেদন অবশ্যই সচিত্র তথ্য উপাত্ত, লিংক, ফটো, অডিও ভিডিও চিত্রসহ ডকুমেন্ট আমাদেরকে পাঠাতে পারেন। সাথে আপনার এলাকার বিভিন্ন সাপ্তাহিক, দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন পত্রিকা, অনলাইন টিভি, আইপি টিভি, স্যাটেলাইট টিভি এবং তথ্যভিত্তিক সামাজিক ইউটিউব চ্যানেলের নামসহ ইমেইল এবং ওয়েব লিংক আমাদেরকে পাঠান। প্রিয়, ভুলবেন না। আগামি ৭ মে পবিত্র মাহে রমযান, অর্থ্যাৎ ৬ মে রাতে সেহরীর মধ্য দিয়ে প্রথম রোজা শুরু।
আর তাই ঈদউল ফিতরের পর জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে ২২ জুন শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে কেন্দ্রীয় সমাবেশ। সমাবেশে সকল জেলা ও উপজেলা কমিটির সভাপতি, সম্পাদক,সাংগঠনিক সম্পাদক, আইটি সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, প্রচার সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের আমন্ত্রন রইলো। আগ্রহী অন্যজনকে আমন্ত্রন জানাতে পারেন। মনে রাখবেন ১৫ জুলাই বিএমএসএফ ৭ পেরিয়ে ৮এ পা ফেলবে। সংগ্রামি, শিশু সংগঠন হিসেবে বিএমএসএফ অনেক সাংবাদিকের পাশে দাঁড়িয়েছে ১৪ দফার দাবি নিয়ে। জানি অনেকে এটাকে চিঠি মনে করবেন না তাই খোলা চিঠি হিসেবেই বলছি…।
২০১৪ সালে প্রথম জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৩টি কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর জাতীয় প্রেসক্লাবে এবং ২য়বার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলরুমে ও প্রথম সম্মেলন দৈনিক বাংলায় একটি রেস্টুরেন্টের হলে সম্পন্ন হয়েছিল। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএমএসএফ’র কোন জেলা উপজেলা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা গ্রহন করিনি।
নানা প্রতিকুলতার মাঝে বিএমএসএফকে পথ চলতে হয়েছে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংগঠন পরিচালিত হচ্ছে আপনাদের পুঞ্জিভুত ভালবাসায়। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১৩ রমযান কেন্দ্রীয় কমিটির ইফতার পার্টির আয়োজন রয়েছে। এতে সকল জেলা/উপজেলা নেতৃবৃন্দ আমন্ত্রিত। কথাগুলোর অনেকটাই নতুনদের জন্য। যারা পুরানো তারা অনেকেই এই বিষয়গুলো জানেন। বিএমএসএফ সাংবাদিকদের কল্যাণ, মর্যাদা ও পেশার ঐতিহ্য রক্ষা এবং অধিকারের কথা নিয়ে পথ চলছে।
এই পথচলায় আপনারা যারা বিএমএসএফ’র ১৪ দফা দাবি সব জায়াগায় পৌঁছে দিয়েছেন এ জন্য কৃতজ্ঞ। জানেনতো, এদেশের কিছু কুলীন সাংবাদিকের কারনে আজ গণমাধ্যমের তেরটা। ছাল নাই কেডির নাম বাঘা! এদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কারনেই গোটা সাংবাদিক সমাজ আজ লাঞ্ছিত, লজ্জিত, দূ:খিত এবং সুষম সুবিধা বঞ্চিত। এই পেশায় অনেকে বেতন-ভাতা ছাড়া কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীন হয়ে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকি, ছাটাই, বহিস্কার আদেশে জি স্যার হ্যা স্যারে পৌঁছে গেছি। পেটে দিন তো পিঠে সইবে।
পেটেও দেবেন না-ঘাড় ধাক্কা দিয়ে পাছায় লাথি! এটা সাংবাদিক সমাজ আর মেনে নেবেনা। কেবল এই পেশাটিতেই রয়েছে ঘরে জ¦ালা-বাইরে জ¦ালার মত ঘটনা। দেড় লাইনের নোটিশে ৬৫জনকে চাকরীচ্যুতের ঘটনাও আমাদের জানা। রক্তচক্ষু, ভয়, হুমকি, হামলা, মামলা, ক্ষতিসহ রাজনৈতিক প্রতিহিংসাতো আছেই। এক কথায় অরক্ষিত আমাদের গণমাধ্যম। এ পেশার কেউ নিরাপদ নয়। মিডিয়া অফিসের পিওন থেকে কম্পিউটারম্যান, ডিজাইনার, মেক্যাপম্যান, পেষ্টারের ওপড়ে চলছে স্টীমরোলার। একজন সাংবাদিক অবশ্যই ত্যাগী। একজন মানবিক মূল্যবোধের মানুষ। সৎ এবং সাহসী। জ্ঞানী-গুণী। লেখক-কবি, বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। তাইতো রাস্ট্রের ৪র্থস্তম্ভে তার ঠিকানা। এসব স্টীমরোলার মিডিয়াগুলোর স্টাফ রিপোর্টার থেকে শুরু করে পৌঁছে গেছে উপজেলা প্রতিনিধির কাঁধ পর্যন্ত।
বিশেষ করে নারী সংবাদকর্মীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এবং হয়রাণীর শিকার। ডেস্কের দ্বারা বাইরের সাংবাদিকরা ঝুলুমের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আপনিও হচ্ছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকার সাংবাদিকরা ফেসবুক সন্ত্রাসি দ্বারাও অনেকটা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখে সাইবার আইনের অপরাধ করে পার পেয়ে যায় অনেকেই। মিডিয়াগুলোতে কোন ধরনের কারন দর্শানো নোটিশ ছাড়া সাংবাদিক ইন-আউট প্রবণতার যেন মহোৎসব চলছে। কোথাও যেন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ নেই।
সংগ্রামি বন্ধু, দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়া ও মাহে রমযান সমাগতের মাঝেই জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ। স্থানীয় সাংবাদিকদের সমন্বয়ে মিট দ্যা প্রেসের আয়োজন করে আমাদের কথাগুলো তুলে ধরুন। সরকারের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। অবিলম্বে সরকার কর্তৃক সারাদেশের পেশাদার সাংবাদিকের তালিক।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply