নিয়ামতুল্লাহ্ ইমন,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃবাবুই পাখির শৈল্পিক নিপুণতায় গড়া নীড় আজ বিলুপ্তির পথে। বাবুই পাখিদের বাসা বানানোর নির্মান শৈলী, কারিগরি দক্ষতা দেখে আধুনিক যুগের প্রকৌশলীদের ভাবিয়ে তোলে। তাল পাতা, খেজুর গাছের পাতা ঠোঁটের সাহায্যে ছেড়া তন্তু দিয়ে সূক্ষ গাঁথুনি করে সু-নিপুন ভাবে তৈরী করে। তাই এ শিল্পী কর্ম মানুষকে বিভিন্ন ভাবে উদ্ধুদ্ধ করে এবং ওই পাখিটি নাম দিয়েছে শিল্পি পাখি। উঁচু তাল গাছের পাতার কিনারে এত মজবুত গাঁথুনী দিয়ে বাসা তৈরী তাই বাতাসে দুললেও ভেঙ্গে পড়েনা, বাসার ভিতরে রোদ বৃষ্টি প্রবেশ করেনা, বাসার প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য রয়েছে একাধিক দরজা,দ্বি তল বাসা দেখা গেছে।
এক অদ্ভুত কারুকার্য ওই বাবুই পাখিটি দেখতে অনেকটা চুড়ই পাখির মত। তবে আকারে একটু বড়, এরা বছরে একবার ঝাঁক বেঁধে তাল গাছের চুড়াই বাসা বাঁধে। এরা খুব পরিশ্রমী ও ধর্য্যশীল পাখি গ্রাম গঞ্জে এই বাবুই পাখি আর আগের মতে চোখে পড়েনা। বাসার ভিতর আধুনিক যুগের মত লাইটের ব্যবস্থা আছে। বাসার ভিতরে এক টুকরা গোবরের ভিতর জোনাকি পোকার মাথা ঢুকিয়ে রাখে ফলে জোনাকীর আলোতে রাতে বাসা আলোকিত হয়ে। “বাবুই পাখিরে বলিছ চড়াই কুড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই আমি থাকি মহা সুখে অট্রালিকা পরে তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে। বাবুই হাসিয়া কহে ; সন্ধেহ কি তাই ? কষ্ট পাই তবু থাকি নিজেরও বাসায় পাকা হোক তবু ভাই পরেরও বাসা নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা” রজনী কান্ত সেনের কবিতার সেই বাবুই পাখি আজ হারিয়ে যাচ্ছে।
যার ফলে এখন আর আগের মতো এই পাখি দেখা যায়না। জন সংখ্যা বৃদ্ধি অপরিকল্পিত বাড়ীঘর নির্মান পুরাতন বড় বড় গাছপালা তাল গাছ ,খেজুর গাছ কাটার ফলে তাদের বাস যোগ্য আবাসস্থল না থাকায় কৃষি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিটনাশক ব্যবহৃত কিটপতঙ্গ খেয়ে এই প্রজাতির বাবুই পাখিটি বিলুপ্তির পথে। ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী দৃশ্য তাল বা খেজুর গাছের মগডালে বাবুই পাখির ঝুলুন্ত বাসা। বাবুই পাখিরা সাধরণত তালগাছ, খেজুর গাছের পাতার কিনারার অংশে বাসা বাধে। ওই বাবুই পাখি বাসা নিয়ে কত কবি সাহিত্যিকরা অকেন গল্প ও কবিতা লিখেছেন যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে এই পাখি! আগামি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো এই পাখিটি কে চিনবে বইয়ের পাতায় বা ইন্টারনেটে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply