পুরোপুরি একপেশে ফাইনাল ম্যাচ! রংপুর যখন ব্যাটিংয়ে নামল তখন গেইল-ম্যাককালামদের সামনে দর্শক হয়ে রইল ডায়নামাইটস ক্রিকেটাররা। আবার ব্যাটিংয়ে নেমে রংপুর বোলারদের তোপের মুখে প্যাভিলিয়নে ফেরার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠল সাকিব-লুইস-আফ্রিদিরা।
বিন্দুমাত্র প্রতিরোধ নেই। একপেশে ম্যাচে ৫৭ রানের বড় জয় নিয়ে প্রথমবারের মত বিপিএল শিরোপা ঘরে তুলল রংপুর রাইডার্স। সর্বশেষ ৫ আসরে চতুর্থ শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন অধিনায়ক মাশরাফি।
২০৭ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস। ইনিংসের তৃতীয় বলেই প্রথম আঘাত হানেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই মেহেদী মারুফের (০) উইকেট হারায় ঢাকা। ওই ওভারে মাত্র ১ রান দেন ম্যাশ। পরের ওভারে এসেই জো ড্যানলিকে (০) নাহিদুল ইসলামের তালুবন্দি করেন সোহাগ গাজী। ফিরতি ওভারে এসেই ভয়ংকর ওপেনার এভিন লুইসকে (১৫) মাশরাফির অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত করেন গাজী।
১৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকে ঢাকার দূর্গে চতুর্থ আঘাত হানেন পেসার রুবেল হোসেন। তার বলে ক্রিস গেইলের তালুবন্দি হন তার স্বদেশী বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান কায়রন পোলার্ড (৫)। একপ্রান্ত আগলে লড়াইয়ের চেষ্টা করছিলেন অধিনায়ক সাকিব। নাজমুল ইসলামের বলে শেষ হয় তার ১৬ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২৬ রানের ইনিংস।
রংপুরকে ৬ষ্ঠ সাফল্য এনে দেন টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ আল-রাউন্ড পারফর্মেনস দেখানো ইংলিশ অল-রাউন্ডার রবি বোপারা। তরুণ অল-রাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনকে (১) পরিস্কার বোল্ড করে দেন তিনি। ঢাকার শেষ ভরসা ছিল পাকিস্তানি হার্ডহিটার শহিদ আফ্রিদি। কিন্তু না! ১ ছক্কায় মাত্র ৮ রান করা আফ্রিদি নাজমুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হতেই উল্লাস শুরু হয় রংপুর শিবিরে।
ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে জহুরুল ইসলাম এবং সুনিল নারাইন প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। নারাইনকে ১৪ রানে বোল্ড করে দেন উদানা। ব্যর্থতার মিছিলে দাঁড়িয়ে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি উপহার দেন জহুরুল। তার ৩৮ বলে ৫০ রানের ইনিংসটিও থামে উদানার বলে বোল্ড হয়ে। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৬০ রান! রসিক মাশরাফি বোলিংয়ে আনেন ব্যাট হাতে ঝড় তোলা ক্রিস গেইলকে। তার প্রথম চার বলে কোনো রানই নিতে পারলেন না খালেদ আহমেদ। পঞ্চম বলে ২ রান। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান তুলতে সক্ষম হয় ঢাকা। ৫৭ রানের জয়ে প্রথমবারের মত শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতল রংপুর রাইডার্স।
এর আগে মঙ্গলবারের গ্র্যান্ড ফাইনালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১ উইকেটে ২০৬ রানের পাহাড় গড়ে রংপুর রাইডার্স। গতকালের সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসকে (৩) ইনিংসের শুরুতেই কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন ঢাকা অধিনায়ক সাকিব। উইকেটে আসেন ম্যাককালাম। অপর প্রান্ত থেকে আক্রমণ শুরু করেন ক্যারিবীয় দানব ক্রিস গেইল। অল্প সময়েই হাত খুলতে শুরু করেন ম্যাককালামও। ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন গেইল। এরপর আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন তিনি।
মাত্র ৫৭ বলে ৪টি চার এবং ১১টি ছক্কায় সেঞ্চুরি তুলে নেন গেইল। চলতি বিপিএলে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। ফাইনালসহ সর্বশেষ চার ম্যাচের ৩টিতেই সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন রংপুরের দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। ৪২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে জুটির মর্যাদা রাখেন ম্যাককালাম।
গত ম্যাচে ১৪টি ছক্কা মেরে রেকর্ড গড়েছিলেন গেইল। আজ নিজেই ভেঙে দেন নিজের রেকর্ড। ছক্কা হাঁকান মোট ১৮টি। ম্যাচ শেষে ৬৯ বলে ৫ চার ১৮ ছক্কায় গেইলের নামের পাশে অপরাজিত ১৪৬ রান! তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া ব্রেন্ডন ম্যাককালামও ৪৩ বলে ৪টি চার এবং ৩ ছক্কায় ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে মাশরাফি বাহিনীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ২০৬ রান।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / ক.আ।
Leave a Reply