প্রথম দিনের পর ম্যাঞ্চেস্টারে ভারত-নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনাল গড়াল দ্বিতীয় দিনে। উৎকণ্ঠা ছিল পুরো ২৪ ঘন্টারও বেশি। শেষমেষ নাটকীয়ভাবে পরাজয় বরণ করে ভারত। এ ম্যাচের টানটান উত্তেজনা যেন হার মানায় হলিউডি থ্রিলারকেও। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া উত্তেজক সেমিফাইনালগুলি কেমন ছিল? দেখে নেওয়া যাক।
১৯৮৩-র বিশ্বকাপে ভারত অপ্রত্যাশিত ভাবে হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ডকে। প্রথমে ব্যাট করে ৬০ ওভারে ২১৩ করে ইংরেজরা। গ্রুপের ম্যাচে ভারত ২০০-র ওপরে রান তুলতে হোঁচট খায় দু’বার। ৫০ রানের মধ্যে দুই ওপেনার গাওস্কর ও শ্রীকান্তকে হারিয়ে বিপত্তি তৈরি হয় এই ম্যাচেও। তবে ভাল বোলিং-এর পর মোহিন্দর অমরনাথের ৪৬ রানের ইনিংস এ বারের জয়ের পথে কোনও বিপত্তি তৈরি হতে দেয়নি।
যশপাল শর্মা, সন্দিপ পটেলদের ব্যাটও ইংরেজদের তেজ কমিয়ে ভারতকে প্রথমবারের জন্য তুলে দেয় বিশ্বকাপ ফাইনালে। সেখানে ক্যারিবিয়ানদের হারিয়ে বিশ্বকাপ হাতে তোলেন কপিলদেব নিখাঞ্জ।
অকল্যান্ডের মাঠে আবার অঘটন। ১৯৯২-এর বিশ্বকাপে অবসর ভেঙে ফিরে আসা ইমরান খানের পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় ক্রিস কেয়ার্নসের নিউজিল্যান্ড। সে বারের শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের হেরে যাওয়াই ছিল বিশ্বকাপের সব চেয়ে বড় অঘটন। সেমিফাইনালে ইনজামামের (৩৭ বলে ৬০) বিধ্বংসী ব্যাটিং জয় এনে দেয় পাকিস্তানকে।
২৬২ রানে শেষ হয়ে যায় কিউয়িরা। সেই রান তুলতে খেলা গড়ায় ৪৯ ওভারে। রামিজ রাজা, ইমরান, মিঁয়াদাদ ও ইনজামামের পর ঝড় তোলেন মইন খান। ১১ বলে ২০ করে পাকিস্তানকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেন তিনিই।
১৯৯৬-এর বিশ্বকাপে ভারত-শ্রীলঙ্কার সেমিফাইনালে দর্শক হাঙ্গামার কথা সবাই মনে রাখলেও, উত্তেজক খেলার দিক থেকে কিন্তু আগে থাকবে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। বিশপ ও অ্যামব্রোজের দাপটে শুরুতেই ১৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে মাইকেল বিভান ও স্টুয়ার্ট ল’র ব্যাটে ভর করে তাঁরা তোলে ২০৭ রান।
লারা-চন্দ্রপলের জুটি ভাল খেললেও, মাত্র ২৯ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচের সেরা শেন ওয়ার্নের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয় ক্যারিবিয়ানরা। ৯ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি।
১৯৯৯-এর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ম্যাচ গড়ায় শেষ ওভার অবধি। অস্ট্রেলিয়ার পর পর তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শুরু এই বিশ্বকাপেই। অপ্রতিরোধ্য ব্যাগি গ্রিনদের সঙ্গে লড়াই জমে দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ২১৩ রানে শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। বল হাতে দাপট দেখায় শন পলক। ৫ উইকেট নেন তিনি।
কিন্তু সেই রান তুলতে নাভিশ্বাস ওঠে প্রোটিয়াদের। ওয়ার্নকে সামলাতে ব্যর্থ হন তাঁরা। ৪ উইকেট নিয়ে তিনি ধস নামান দক্ষিণ আফ্রিকান ইনিংসে। ৪৯.৪ ওভারে ম্যাচ জেতে অস্ট্রেলিয়া।
গতবারের বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে বিঘ্ন ঘটায় বৃষ্টি। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথমে ব্যাট করে তোলা ৪৩ ওভারে ২৮১/৫, ডার্কওয়াথ-লুইস নিয়মে নিউজিল্যান্ডের জন্য হয়ে দাঁড়ায় ৪৩ ওভারে ২৯৮।
শুরুতেই ঝড় তোলেন ম্যাকালাম (২৬ বলে ৫৯ রান)। মাঝে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়লেও সামলে নেন এলিয়ট ও অ্যান্ডারসন। তাদের ইনিংস কিউয়িদের নিয়ে যায় ফাইনালে। সেখানে তাদের হার মানতে হয় অস্ট্রেলিয়ার সামনে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply