নোয়াখালীতে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নিজ গ্রামে তার পরিবারকে একটি বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে। শুক্রবার (১১ জানুয়ারি)বাড়িটি বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাড়ি হস্তান্তর উপলক্ষ্যে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিনাপালের সভাপতিত্বে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নৌ আঞ্চলিক কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ বিএসপি, এনসিসি, পিএসসি।
সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে নৌবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দিয়ে সজ্জিত অবস্থায় বাড়িটি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের হাতে বাড়িটির চাবি তুলে দেন চট্টগ্রাম নৌ আঞ্চলিক কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ। এর আগে বাড়িটির উদ্বোধন করেন তিনি।
সভায় প্রধান অতিথি আবু আশরাফ বলেন, “শুধু এই বাসভবন নয়, ভবিষ্যতে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ সন্তান এই বীরের পরিবারের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ তাঁর ছেলে শওকতের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে”।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের বড় মেয়ে নূরজাহান বেগম নার্গিস বলেন, “বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের জন্য যা করেছে, অতীতে কোনো সরকার তা করেনি”। এসময় তিনি নতুন বাড়ির জন্য সরকার ও নৌবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন”।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌবাহিনীর কমডোর নিজামুল হক, নোয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মাহে আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু ইউসুপ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা, নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম শাহাজাহান মজুমদার, বীরশ্রেষ্ঠের বড় মেয়ে নূরজাহান বেগম নার্গিস, ছোট ছেলে শওকত আলী, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন পাকিস্তান নৌবাহিনীর চাকড়ি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। এলাকার কয়েকশ’ তরুণ যুবককে নিয়ে একটি মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করেন তিনি। ১৯৭১ সালের মে মাসে প্রথম সপ্তাহে ৫০০ প্রশিক্ষিত যুবক নিয়ে তিনি ৩নং সেক্টর কমান্ডার মেজর কেএম সফিউল্লাহর অধীনে যুদ্ধে যোগ দেন। পরে তিনি যুদ্ধজাহাজ পলাশ ও পদ্মার স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসা নদীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বহনকারী যুদ্ধজাহাজ পলাশের ইঞ্জিন রুমের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি সেনারা বোমাবর্ষণ শুরু করে। বোমার আঘাতে জাহাজে আগুন ধরে গেলে তাতে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন রুহুল আমিন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply