আজ থেকে ১৬ বছর আগের কথা। রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলেন না জাহিদ সবুর। অথচ ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। পরে ভর্তি হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবিতে। সেই দিনগুলোতে প্রযুক্তিগত জ্ঞান তার অতটা ছিল না। কিন্তু দিনে দিনে নিজেকে ভেঙেচুরে, নতুন করে গড়ে সেই জাহিদ এখন হয়ে গেছেন বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার তথা ডিরেক্টর!
জাহিদ ২০০৭ সালে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে মাস্টার্স শেষ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে তিনি প্রথম কোনো শিক্ষার্থী হিসেবে সিজিপিএ-৪ অর্জন করেন! পড়ালেখা শেষ করে গুগলের ভারত অফিসে জয়েন করেন।
প্রথম কাজ শুরু করেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। গুগলের ব্যাকএন্ড সিস্টেম নিয়ে ছিল তার প্রথম প্রকল্প। একটা সময় গুগলের কোড বেইজে এক নম্বর ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যান। গত ২ মে পদোন্নতি পেয়ে ডিরেক্টর হয়ে গেছেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘পিছিয়ে পড়া’ হিসেবে গণ্য করা হয়। জাহিদ সবুর মনে করেন এই ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়লে নেতিবাচক বলা হবে এর কোনো ভিত্তি নেই। নিজেকে এগিয়ে নিতে নিজের সঙ্গেই প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়। শিখতে হয় নতুন কিছু।’
জাহিদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। কিন্তু জন্ম সৌদি আরবে। বাবা অধ্যাপনা করতেন কিং ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। যখন তার আট বছর বয়স, তখন পরিবারের সঙ্গে দেশে ফিরে আসেন। তাকে ভর্তি করানো হয় মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে চলে যান অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে।
স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় বরাবরই তিনি প্রথম হতেন। তবে ক্লাসে রোল থাকত নিচের দিকে। মুখস্থবিদ্যায় এতটুকু ভালো ছিলেন না। ও লেভেলে মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করলেও এ লেভেলে খুব খারাপ অবস্থা হয়। যার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি। তাই বলে জাহিদের স্বপ্ন ভেঙে যায়নি। বরং নিজেকে নিয়ে গেছেন শেকড় থেকে শিখরে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply