মশক নিধন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রশাসনের তিন কর্মকর্তা ও এক চিকিৎসক। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো.আবদুর রউফ মিয়ার নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন তারা। চার জনের প্রতিনিধি দলে তিনজনই বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এর মধ্যে একজন উত্তর সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী সচিব) মো.সগীর হোসেন।
সগীর হোসেনের কাজ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ নিয়ে।অথচ তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হচ্ছে মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শন করতে। তবে তাদের সিঙ্গাপুর যাওয়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি ।
দৈনিক জাগরণকে এতথ্য জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির সম্পত্তি কর্মকর্তা সগীর হোসেন নিজেই। তিনি বলেন,সরকার চাচ্ছে নগরীর মশা নিধন আর অবৈধভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে দখলে থাকা সম্পতি উদ্ধারে কৌশল সংগ্রহ করে আসা। কোন দেশে পাঠানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ভারত,সিঙ্গাপুর,চায়না। এই তিন দেশের মধ্যে যে কোনো দেশে পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।তবে ডেঙ্গুর প্রভাব যে সব দেশে বেশি ছিলো ওই সব দেশের প্রতি আগ্রহ বেশি। কারণ হিসাবে এই কর্মকর্তা বলেন,মূলত এই সফর হবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ধারণা নিতে।
এদিকে প্রশাসন ক্যাডাররা সিঙ্গাপুরে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা আনবেন,তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তুলছেন প্রশ্ন। তাদের অভিযোগ- প্রতিনিধি দলে যাদের যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, রোগতত্ত্ববিদ কিংবা কীটতত্ত্ববিদ,তাদের পাঠানো হচ্ছে না। কেবল দক্ষিণ সিটি থেকেই একজন চিকিৎসককে পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা মশক নিধন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। ফলে সিঙ্গাপুর থেকে আনা অভিজ্ঞতা তিনি কাজে লাগানোরই সুযোগ পাবেন না। ফলে রাষ্ট্রের টাকা অপচয় করে পাঠানো একেবারেই অযথা। তার পরিবর্তে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা করেন কিংবা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে,এমন কাউকে পাঠালে মশক নিধন কার্যক্রমে গতি আনা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘প্রতিনিধি দলের সদস্য মনোনয়ন দেবে সিটি করপোরেশন। আর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রতিনিধি পাঠালে ভালো কাজ হবে। এমনি সরকারিভাবে অর্থ খরচ করার কিছু নেই। তবে কবে, কখন প্রতিনিধি দলটি সিঙ্গাপুর যাবে তা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। আর কারা যাবে তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই বলেন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী নিজেই বিষয়টি চিন্তভাবনায় নিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক জাগরণকে বলেন, বিষয়টি চমৎকার।মশা নিধনের ধারণা নিয়ে আসলে আমাদের দেশের জন্য ভালো হবে। পাশাপাশি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া সম্পতি সিটি করপোরেশন উদ্ধার করার কৌশল জানতে পারলে ভালো হবে।
এডিস মশা নিধনে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় পদে পদে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এসব সমস্যা দূর করতে চলতি মাসে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম কলকাতা গিয়ে সেখানকার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করেন। দেশে এসে কলকাতার মশক নিধনের অভিজ্ঞতাও কৌশল কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।
এ ছাড়াও কলকাতার ডেপুটি মেয়রের সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মশা নিধনের বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। সিঙ্গাপুর থেকে ধারনা নিয়ে আসলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভালো ফল দেবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply