রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ধর্মবোনের কিশোরী মেয়েকে (১৪) ধর্ষণ করেছে লেবু মিয়া (৪০) নামের এক ধর্মমামা। বর্তমানে ওই কিশোরী ১৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।
উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের ছোট রূপাই নীলেরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক লেবু মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মর্নেয়া ইউনিয়নের চৌদ্দমাথা পাইকাটারি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে লেবু মিয়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাতার কার্ড বা কাজ দেয়ার লোভ দেখিয়ে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়। ওই ইউনিয়নের ছোট রূপাই নীলেরপাড়ের খাস জমিতে একটি ভাঙা চালায় কোনোরকমে বসবাস করে আসছেন ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর পরিবার।
বাবার দিনমজুরির আয় দিয়ে চলে তাদের সংসার। সংসারের অভাব-অনটনের কথা চিন্তা করে একটি সুবিধাভোগী কার্ড বা কাজের জন্য লেবুর কাছে যান কিশোরীর মা। সেই সঙ্গে লেবু মিয়াকে ধর্মভাই বানান। সেই হিসেবে ধর্মবোনের ছেলে-মেয়েরা লেবু মিয়াকে মামা হিসেবে মানতো ও ডাকতো। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে লেবু মিয়া খোঁজখবর নেয়ার জন্য ধর্মবোনের বাড়িতে যাতায়াত করতো। একপর্যায়ে ধর্মবোনের ১৪ বছরের কিশোরীর দিকে দৃষ্টি পড়ে লেবুর।
পেটের তাগিদে কিশোরীর বাবা-মা বাইরে থাকার সুযোগে ওই বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ভাগনিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে লেবু মিয়া। একপর্যায়ে কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন দেখা দিলে লেবু যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। পরে ভুক্তভোগী কিশোরী বাবা-মায়ের কাছে লেবুর ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দেয়।
এরই জের ধরে ২৮ এপ্রিল লেবুকে বাড়িতে ডেকে এনে স্থানীয়দের সামনে মেয়েকে ধর্ষণের বিষয়টি জানতে চায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা-বাবা। এ সময় কিশোরীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য যাবতীয় ব্যয় প্রদানের কথা বলে সেখান থেকে চলে যায় লেবু মিয়া।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা বলেন, আমার দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে লেবু ধর্মভাই সেজে আমার মেয়ের সর্বনাশ করছে। মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারি, আমার মেয়ে ১৭ সপ্তাহের গর্ভবতী। তাই প্রভাবশালীদের কাছে মাথা নত না করে এলাকার কয়েকজনের সহযোগিতায় লেবুর শাস্তির আশায় বুধবার আদালতে মামলা করেছি।
ওই এলাকার বাসিন্দা হারুন, আশরাফুল, রশিদ, সাজু ও মাহমুদসহ অনেকে জানান, লেবু মিয়া ইতোপূর্বে এমন আরও অনেক ঘটনা করেও অর্থের বিনিময়ে রক্ষা পেয়েছে। এটিও সে প্রভাব খাটিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় দেরিতে হলেও লেবুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আমরা তার কঠিন শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লেবু মিয়া জানায়, এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল পাঁয়তারা করছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।
এ বিষয়ে মর্নেয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোছাদ্দেক আলী আজাদ বলেন, বিষয়টি ভুক্তভোগী মেয়েটির পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি। এ নিয়ে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর আদালতে মামলা করেছেন তারা। মেয়েটি গর্ভবতী এটা সত্য। তবে লেবু এর সঙ্গে জড়িত কিনা তা তদন্তে প্রমাণিত হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply