বিশ্বকাপ জয়ের জন্য আর্জেন্টিনার অপেক্ষার সময় বাড়ছে ক্রমশ। ১৯৮৬ সালে ডিয়েগো ম্যারাডোনার জাদুর পর আরেক শিরোপার হাহাকার ঘুচছে না কিছুতেই। ৩২ বছর তো পেরিয়ে গেল।
এবারও প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার পর প্রত্যাশার বেলুন গেছে চুপসে। আর ফুসে উঠেছেন ম্যারাডোনা। গ্যালারিতে থাকা এই আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বরের সাফ কথা, দলকে এভাবে খেলালে আর্জেন্টিনায় ফিরতে পারবে না সাম্পাওলি।
কোনো শিরোপা আর্জেন্টিনাকে এনে দিতে পারেননি সাম্পাওলি। এভাবে খেলে যদি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ে আলবিসেলেস্তেরা, তাহলে ম্যারাডোনার কথাকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। সত্যিই দেশে ফেরা কঠিন হয়ে যাবে তাঁর।
আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্রতে প্রবল হতাশা রয়েছে সত্যি, তবে আর্জেন্টিনা ক্যাম্প ভেঙে পড়ছে না। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ সাম্পাওলি কিংবা মিক্সড জোনে লিওনেল মেসি, সের্হিয়ো আগুয়েরো, হাভিয়ের মাসচেরানোর কথাবার্তায় বরং প্রতিজ্ঞার সুর।
এই দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে নিঝনি নোভগর্দে পরশু ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আবার ওড়াতে হবে স্বপ্নঘুড়ি। আর গ্রুপের অন্য ম্যাচে ক্রোয়াটরা ২-০ গোলে নাইজেরিয়াকে হারানোয় সেটি আর্জেন্টিনার জন্য বড্ড জরুরিও।
স্পার্তাকের মাঠে লিওনেল মেসির হতাশা দেখা গেছে স্পষ্ট। ঘামবিন্দুর সঙ্গে চোখের জল মেশেনি সত্য, তবে হৃদয়ে রক্তক্ষরণটা বোঝা যাচ্ছিল ঠিকই। মিক্সড জোনে তাই অন্যদিকে তাকিয়ে তাঁর চলে যাওয়াই ছিল প্রত্যাশিত।
কিন্তু আর্জেন্টাইন সাংবাদিকদের অনুরোধে ঠিকই দাঁড়িয়ে যান। সেখানে নিজের পেনাল্টি মিসের দায়িত্ব নিয়েছেন মেসি, আমাদের জন্য ওদের রক্ষণ ভাঙা কঠিন ছিল। সবাই মিলে এত পিছিয়ে রক্ষণ করলে তা কঠিনই হয়ে যায়। পেনাল্টি মিস করাটা খুব কষ্টের। আমি এর দায়িত্ব নিচ্ছি। তবে এটি পেছনে ফেলে এখন সামনে তাকানোর প্রত্যয় তাঁর, এখনই আমাদের উল্টোপাল্টা কিছু করার প্রয়োজন নেই। বরং মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। মনোযোগ দিতে হবে অনেক বেশি উন্নতির দিকে।
প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ানোতেই যে সব শেষ হয়ে যায়নি, সেটিও মনে করিয়ে দেন মেসি, বিশ্বকাপ শুরু হলো মাত্র। আর আমরা তো জানতামই যে, টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচ সহজ হবে না। এখন আমাদের লক্ষ্য একটাই, ক্রোয়েশিয়াকে হারাতে হবে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সাম্পাওলি। এই ভদ্রলোকের শুরুটাই সেরা খেলোয়াড়কে আড়াল করার মাধ্যমে, লিও চেষ্টা করেছে; খুব করে চেয়েছে আর্জেন্টিনাকে জেতাতে। এখন আপনাদের বিশ্লেষণ যা-ই বলুক না কেন, আমি সন্তুষ্ট। কেননা আমাদের পরের রাউন্ডে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা এখনো লিওর রয়েছে। আর সে জন্য ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে মহা গুরুত্বপূর্ণ।
সেটি জানেন সাম্পাওলি, আর সে জন্য কৌশলও সাজাচ্ছেন ভিন্নভাবে, ক্রোয়েশিয়ার খেলার ধরন আইসল্যান্ডের মতো না; আবার নাইজেরিয়ার মতোও না। ওদের হারাতে হলে আমাদের আক্রমণে বৈচিত্র্য খুঁজে পেতে হবে।
আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত এই ড্র এর পর সাম্পাওলি শিষ্যেরা জয়ের কোনো বিকল্প দেখছে না। এর জন্যেই ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া মেসি বাহিনী। কতটুকু প্রমাণ তারা মাঠে দিতে পারে, সেটাই এখন দেখার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply