কেপটাউনে গতকালের ম্যাচটা শেষ হবার আগে পর্যন্ত সব জরিপ ছিলো ভারতের পক্ষে। ওই মাঠে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের গড় স্কোর ১৭০ এর মতো। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটা নেমে আসে ১৩০ এর কাছাকাছি। সর্বশেষ ছয় ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দল জিতেছিলো পাঁচবার। দ্বিতীয় ইনিংসে দল জেতে একবার।
এই হলো মোটামুটি মাঠের পরিসংখ্যান। এই পরিসংখ্যানে দাঁড়িয়ে ভারত যখন প্রথমে ব্যাটিং শেষে ১৮৮ রান সংগ্রহ করলো, হয়তো অনেকেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন আগের টি-টুয়েন্টির মতো এটাও হয়তো ভারতের দিকেই ঝুলে পড়বে। কিন্তু ওই যে, ক্রিকেটের সেই চিরন্তন উক্তি, হতে পারে যে কোনো কিছুই। হলো ও তাই। তার উপর ফরম্যাটটা তো টি-টুয়েন্টি।
আশা-হতাশার দোলাচালে শেষ পর্যন্ত পাল কোন দিকে নৌকে নিয়ে যাবে, কে বলতে পারে? সে সময় শক্ত মাঝি, কিংবা নাবিকেরই বা কী এমন করার থাকে, চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া? চার উইকেটে ১৮৮ রান তুললেও ভারত কিন্তু প্রথমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ারই আভাস দিয়েছিলো। ব্যক্তিগত শুন্য এবং দলীয় শুন্য রানেই সাজঘরে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন রোহিত শর্মা।
তখন এক ওভারের খেলা শেষ। এরপর ধাওয়ান বহু দিন পর দলে ফেরা সুরেশ রায়নাকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। ধাওয়ানকে ব্যক্তিগত ২৪ রানে ফিরিয়ে দিয়ে সে আশায় জল ঢেলে দেয় দক্ষিন আফ্রিকা।
কোহলী নামেন চার নম্বর ব্যাটসম্যান হয়ে। তিনি পাঁচ বল খরচ করে এক রান করে সাজঘরে ফেরেন। এর পরপরই সুরেশ রায়না আউট হলে পারতপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়েই পড়ে ভারত। এরপর অবশ্য শক্ত হাতে হাল ধরে পরিস্থিতি সামাল দিতে শুরু করেন মণীষ পান্ডে। তিনি তুলে নেন তাঁর দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি অর্ধশতক।
যোগ্য জুটি হিসেবে অন্য পাশে টিকে থাকেন মহেন্দ্র সিং ধোনী। তিনিও এদিন তুলে নেন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে তাঁর দ্বিতীয় অর্ধশতক। সেটি মাত্র ছাব্বিশ বল খেলে। ম্যাচ শেষে অপরাজিত থাকেন দুজনই। ততক্ষণে পান্ডের সংগ্রহ ৭৯, ধোনীর নামের পাশে ৫২। তাঁদের জুটির উপর ভর করেই ভারত তোলে ১৮৮ রানের পাহাড়।
এই রানের পাহাড়ের আত্মতুষ্টিতেই কী না হারতে হল ভারতকে, কে জানে! অন্তত বেশ কয়েকটা আউটের সুযোগ মিস করা তো তেমনই ইঙ্গিত দেয়। ধোনী মিস করেন একটা স্ট্যাম্পিং। বল তাঁর গ্লাভসের নিচ দিয়ে চলে যায়। চাহাল ক্যাচ মিস করে প্রতিপক্ষের সুযোগটাকে আরো একটু পাকাপোক্ত করেন।
দিন শেষে তাই খেলার ফলাফল দক্ষিন আফ্রিকার দিকেই ঝুঁকে যায়। ম্যাচ শেষে ডুমিনি অপরাজিত থাকেন ৬৪ রানে, ১৬০ স্ট্রাইক রেট নিয়ে। ম্যাচ জেতাতে বড় অবদান রাখেন ক্ল্যাসেন, ৬৯ রান করে। ফলশ্রুতিতে ছয় উইকেটের বিশাল হার ভারতের জন্য, সকল পরিসংখ্যানকে ভুল প্রমাণিত করে।
ক্রিকেট কী আর কোনো পরিসংখ্যান মেনে চলে?
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply