গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
এরই জ্জের ধরে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জিডি হয়। গত বৃহস্পতিবার সেনা সদরের পক্ষ থেকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওই জিডি করা হয়।
দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরিটি (জিডি) রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে।
এই জিডিটি রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো: আব্দুল বাতেন বাসসকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফজলুর রহমানকে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তাপস কুমার দাস বাসসকে জানান, সেনা সদর দপ্তরের আইনবিষয়ক উইংয়ের মেজর এম রকিবুল আলম বৃহস্পতিবার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায় জিডি করেন।
টেলিভিশনে দেওয়া জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অসত্য’ বলে আখ্যায়িত করে গত শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে বক্তব্য দেওয়া হয়। আইএসপিআর বলেছে, ডা. জাফরুল্লাহর দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য কেবল সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের সুনাম ও সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করেনি, বরং তা সেনাবাহিনীর প্রধানের পদকে চরমভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে।
পরে সংবাদ সম্মেলন করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জেনারেল আজিজকে অসাবধানতাবশত কোনো মনঃকষ্ট দিয়ে থাকলে সে জন্য আমি পুনরায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। উল্লেখ্য, আমি ইতিমধ্যে বিগত দুদিন কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে আমার বক্তব্যে ভুল শব্দচয়ন ও শব্দবিভ্রাটের বিষয়টি প্রকাশ করে সেনাপ্রধানের নিকট দুঃখ প্রকাশ করেছি।’
তিনি বলেন, সময় টেলিভিশনের বিশেষ অনুরোধে শারীরিক দুর্বলতা নিয়েই আমি ৯ অক্টোবর রাত ১০টায় তাদের একটি টক শোতে অংশ নিই। ওই টক শোতে অপর অতিথিরা ছিলেন সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ আলম লেলিন। আলোচনাকালে আমি দেশের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম। জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারি সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ‘জিওসি’ ছিলেন না, ‘কমান্ড্যান্ট’ও ছিলেন না। তিনি তাঁর কর্মজীবনের একসময়ে চট্টগ্রাম সেনাছাউনিতে আর্টিলারি প্রশিক্ষক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ‘কোর্ট মার্শাল’ হয়নি একবার ‘কোর্ট অব এনকোয়ারি’ হয়েছিল। ভুল বক্তব্য ও শব্দবিভ্রাটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং মর্মাহত। সেনাবাহিনী বা জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এরূপ কোনো অভিপ্রায়ও আমার নেই। আমাদের সেনাবাহিনীর গৌরবে আমি গর্বিত।’
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply