গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত নিতে আইসিসি মিয়ানমারের পর্যবেক্ষণ জানতে চেয়েছে। আইসিসির প্রাক্-বিচারিক শুনানিতে তিন সদস্যের আদালত মিয়ানমারকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে পর্যবেক্ষণ দিতে বলেছে।
মিয়ানমার এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছে।তারা বলেছে, রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এর কাছে পর্যবেক্ষণ পাঠাবে না মিয়ানমার। এখন পর্যন্ত মিয়ানমার আইসিসির সদস্য না হওয়ায় আদালতের গত বৃহস্পতিবারের ওই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি মানতে রাজি নয় তারা।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মহাপরিচালক জ তে-এর বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম ইলেভেন মিয়ানমার গতকাল শনিবার এ খবর জানায়।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মহাপরিচালক জ তে বলেন, মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয়। মিয়ানমারের মতো একই ধরনের পরিস্থিতি সিরিয়া আর কেনিয়ার ক্ষেত্রেও হয়েছিল। সিরিয়া আর কেনিয়ার ক্ষেত্রেও কি পর্যবেক্ষণ জমা পড়েছিল? পড়েনি। শুধু সদস্যদেশের ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয়, আর সনদে স্বাক্ষরকারী দেশও নয়। কাজেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিসির ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি সাংবাদিকদের জানান, শরণার্থী সংকট মোকাবিলা করছে এমন কোনো দেশের বিরুদ্ধে আইসিসি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কাজেই মিয়ানমার আইসিসির সর্বশেষ পদক্ষেপ পুরোপুরি মানবে না।
রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আইসিসির তদন্তের এখতিয়ার আছে কি না, এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত ওই আদালতে গত বুধবার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের এক দিন পর মিয়ানমারের কাছে আদালত পর্যবেক্ষণ চাইল।
প্রাক্-বিচারিক শুনানিতে তিন সদস্যের আদালত বলেছেন, ফাতাও বেনসুদার ৯ এপ্রিলের আবেদনের প্রসঙ্গ টেনেছেন। ফাতাও বেনসুদা অভিযোগ করেছেন ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারে আইনসম্মতভাবে উপস্থিত ৬ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাড়িয়ে দেওয়ার ওই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে মিয়ানমারে। তাই আদালত মনে করেন, প্রধান কৌঁসুলির অনুরোধের বিষয়ে মিয়ানমারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যবেক্ষণ চাওয়াটা যথাযথ হবে। ওই পর্যবেক্ষণ বিশেষ এই পরিস্থিতিতে আদালতকে প্রধান কৌঁসুলির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
মিয়ানমার প্রকৃতপক্ষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া কিংবা তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে পুরোপুরি অসহযোগিতা করছে। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য অস্পষ্ট এবং কালক্ষেপণ করছে শুধু। যেটি বাংলাদেশের জন্যে সত্যিই ক্ষতিকর।
এর মধ্যেই এইসব রোহিঙ্গারা মাদক পাচার করছে, মাদক ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এছাড়াও তাদের নিজেদের মাঝে কোন্দল এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে অনেকেই।
এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশের দ্রুত পরিত্রান দরকার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply