ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্ত্রীকে অচেতন করে শ্যালিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক ও খুনের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে অভিযুক্ত নাঈম ইসলাম। রোববার দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার-ই আলম। এদিন সকালে তাকে আদালতে হাজির করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম বাবু জানান, নাঈম ইসলাম পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া ১৬১ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মতোই বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি প্রদানকালে নাঈম ইসলাম বেশ কয়েকবার আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। এসময় সে ভুল করেছেন বলে আদালতকে জানায়। মূলত ধর্ষণের পর চিৎকার করার কারণেই শ্যালিকা তামান্নাকে খুন করেন বলে সে আদালতে স্বীকার করেন।
এসময় সে আদালতকে জানায়, সে তার পিতা বসু মিয়ার সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সড়ক বাজারে নৈশ প্রহরীর কাজ করে। সপ্তাহে একদিন সে বাড়িতে রাতে স্ত্রী ও সন্তানের সাথে থাকবার সুযোগ পায়। গত বুধবার সে বাড়িতে থাকায় বিকেলে স্ত্রীর সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। রাতে দোচালা টিনের ঘরের এক কক্ষে নাঈম স্ত্রী ও সন্তানের সাথে শুয়ে পড়ে। পর্দা দেওয়া পাশের কক্ষে ঘুমান ওই বাড়িতে বেড়াতে আসা শ্যালিকা তামান্না আক্তার। রাত ১ টার দিকে তামান্নার পাশে শুয়ে তাকে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করলে সে ব্যাপকভাবে বাঁধা দিয়েও পরাস্ত হয়। নাঈম শারীরিক সম্পর্ক শেষে উঠে যাওয়ার সময় তামান্না চিৎকার শুরু করলে গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
সকালে বাড়ির লোকজনকে বলে দিতে পারে এই ভয়ও তার মধ্যে কাজ করেছে। শ্যালিকাকে হত্যা করে পুনরায় স্ত্রীর পাশে এসে শুয়ে পড়ে সে। এদিকে গত শনিবার দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় তামান্নার পিতা নোয়াব আলী বাদী হয়ে হত্যা ও শারীরিক সম্পর্কের মামলা দায়ের করেন। এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত ভোর রাত ৩ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের অষ্টগ্রাম নাঈমের মামার বাড়ি থেকে তাকে আটক করেন পুলিশ।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার আমিনপুর গ্রামের নোয়াব আলীর কন্যা তামান্না কালিশীমা-শালগাও উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশুনা করতো। সেই সুবাদে প্রায়ই বড়বোন স্মৃতি আক্তার এর শ্বশুর বাড়ি শালগাও গ্রামে গিয়ে থাকতো। গত ১৭ জুন তামান্না তার বোনের শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসে। গত ১৯ জুন বুধবার রাতে স্ত্রী স্মৃতি আক্তার ও শিশু কন্যা জান্নাতকে আমের জুস খাইয়ে অচেতন করে তার বোন তামান্নাকে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক ও খুন করে নাঈম।
এদিকে ছেলের এ অপকর্মের ঘটনায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে শনিবার ভোরে জেলার নবীনগর উপজেলার গোসাইপুর গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নাঈমের বাবা বসু মিয়া। শনিবার সকালে নবীনগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply