পঞ্চগড়ের ব্যবসায়ি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, শ্রমিক জনগোষ্টিসহ সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। দু’লেন বাইপাস সড়ক হচ্ছে এই জেলায়। এর ফলে মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পঞ্চগড় জেলায় বাইপাস সড়ক নির্মিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সবক্ষেত্রে অথনৈতিক এবং ব্যবসা বানিজ্য প্রসার ঘটবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক এবং সচেতন মহল।
বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মহাসড়কটি পঞ্চগড় শহরের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে। প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই শহরটি গড়ে ওঠেছে বাংলাবান্ধা- ঢাকা মহাসড়কের দুই পাশে। মহসড়কটির দুই পাশেই গড়ে উঠেছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ব্যাংক, মার্কেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বাসাবাড়ি। ফলে মহসড়কটি যানবাহনসহ সাধারণ মানুষের চলাফেরায় অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এদিকে শহরটির প্রাণ কেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে করোতোয়া নদী। এই নদীতে নির্মিত একমাত্র করতোয়া সেতুটিও প্রায় পঁচিশ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। সেতুটিও পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে পণ্য পরিবহন, জেলার মোটরসাইকেল চালক এবং অন্যান্য পরিবহনে।
জেলায় প্রতিদিনই ব্রিজের এবং শহর অতিক্রম করে প্রায় ১ হাজার যানবাহন। তেঁতুলিয়া উপজেলায় সরকার চারদেশীয় স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাবান্ধায়। ভারত, নেপাল, ভুটানের সাথে বাণিজ্য এবং ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু হলে মহাসড়কটি আরও ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সেতুটিও আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মহাসড়কটিতে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত কয়েকবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এসব কারণে পঞ্চগড় শহরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি বাইপাস মহাসড়ক। পঞ্চগড় নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন সরকার জানান, বাইপাশ সড়কটি অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। এই সড়কটি পঞ্চগড়ের মানুষের প্রাণের দাবি।
পঞ্চগড় সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য মতে অচিরেই এই বাইপাশ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে সাড়ে ১২ কিলোমিটার ফোরলেন বাইপাশ মহাসড়ক নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া ওই প্রস্তাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জড়িপ তথ্য, নকশা, জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা সহ বাজেট প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে বাইপাশের জন্য করোতোয়া ও চাওয়াই নদীতে দুটি নতুন ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। বাইপাশ সড়কটি নির্মাণে সাড়ে তিন’শ কোটি টাকা বাজেট পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর জন্য এক’শ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। সদও উপজেলার খানপুকুর এলাকা শুরু হয়ে মীড়গড়, আমতলা হয়ে সুরিভিটায় বাংলাবান্ধা-ঢাকা মহাসড়কে যুক্ত হবে। বাইপাশ সড়কটি নির্মাণে সময় লাগবে প্রায় তিনবছর। ডিপিপির আওতায় এই সড়কটি নির্মাণ করা হবে। ২০১৬ সালে সড়কটি নির্মাণের সার্ভে শুরু হয়। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনাটি প্রেরণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন হলে একনেকে পাশ হলেই জমি অধিগ্রহণ সহ নির্মানের অন্যান্য কাজ শুরু হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, বাইপাশ মহাসড়ক নির্মাণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সরকার অনুমোদন দিলেই কাজ শুরু হবে। বাইপাশ সড়কটি এই জেলা এবং দেশের উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply