নিঃসন্দেহে, কার্টুন ছোট্ট বাচ্চাদের জনপ্রিয় এক অনুষ্ঠান, কার্টুন চলাকালীন বাচ্চাদের কাছ থেকে রিমোট নেয়াটা খুবই কষ্টকর। তার মধ্যে যখন হানি বানি কার্টুন টা শুরু হয় তখন তো রিমোট পাবার আশা করাটাই বৃথা। কেননা, এই কার্টুন এ আছে যাদুকরী একটি অসাধারণ চরিত্র যে কিনা কিছুক্ষণ পর পর একটি কবিতা বলে তারপর বলে উঠে মারতালি। তো বাচ্চারা বিষণ খুশি, এরা খুবই আনন্দ পাই। তাছাড়া,তালি দিতে সবার ইতো ভাল লাগে। ছেলেটা ভালো বলুক কিংবা খারাপ বলুক তার যেন তালি চাই ই চাই। ভাবছেন, আমি কার্টুন নিয়ে গল্প বলবো তা মোটেও না। আজ আমাদের সমাজ হানি বানি কার্টুনের মতোই তালিতে লিপ্ত হয়ে আছে ৷
কি কারণে তালি দিচ্ছি, কোন মুহূর্তে তালি দিচ্ছি, সে দিক থেকে এই সমাজ যেন বাচ্চাদের মতোই ভূমিকায় আছি। কার ও কোন খেয়াল নেই, সিরিয়াস তো প্রশ্নই উঠে না। আর খেয়াল থাকবেই বা কেন, যে সমাজ আজ কলুষিত, ধর্ষণ, খুন, সন্ত্রাস, রাহাজানি,ও দূর্নীতিতে সেরা ।যে সমাজে চারিত্রিক সনদ আনতে গিয়ে শুনেন যে চেয়ারম্যান সাহেব ধর্ষণ মামলায় জেলে যখন জেলের বাহিরে থাকা চেয়ারম্যানের সঙ্গীরা শ্লোগান দিতে থাকে, চেয়ারম্যানের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র। কার্টুনে ঠিক এই রকম মজার মজার জায়গায় বলে উঠে মারতালি। তখন হানি বানি তালিতে লিপ্ত থাকে। আর অপরদিকে কার্টুনের মতো আমরা ও সমাজের
চেয়ারম্যানকে নিয়ে মারতালিতে ঐক্যবদ্ধ। যারা আজ দূর্ণীতিতে সেরা তাদেরকে আজ আমরা করতালি দিয়ে সভাপতির আসনে অধিষ্ঠিত করে যাচ্ছি।আর শ্রোতারা মারতালিতে উজ্জীবিত। খুব চমৎকার সমাজ আমাদের। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গড ফাদারদের আমরা ইয়াবা নিধনের জন্য বসিয়ে রাখছি৷ ডেঙ্গু কতটুকু নিয়ন্ত্রণ হলো সে বিষয় বাদ দিয়ে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ অবদান রাখা ব্যক্তিকে পুরষ্কার দিয়ে বলছি মারতালি। ডেঙ্গুতে কতটা পরিবার শেষ হয়ে গেলো,সে দিকেই খেয়াল রাখার কোন আবশ্যকতা নেই।
কেন ই বা থাকবে ,সেখানে তো মারতালির লোকসংখ্যা খুবই কম। জবাবদিহিতা নেই কাজেই বক্তার ইচ্ছে ই শ্রোতার ইচ্ছে। একটা সমাজ যখন নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে চলে যায় তখন কার্টুনের সেই চরিত্রের মতো না বুঝে মারতালিতে লিপ্ত থাকে গোটা সমাজ। তখন সমগ্র জাতির থাকে না কোন হিতাহিত জ্ঞান, নিজের ব্যক্তিত্ব ভুলে অন্যের তোষামোদিতে ব্যস্ত থাকে সমাজ । সভাপতি সাহেব যাই বলুক মারতালি দিয়ে ভরণ করে নিয়ে যায় সিঃহাসনে। এই যে চরম অধঃপতন আমাদের সমাজে, সেই দিক থেকে বেড়িয়ে আসতে আর কতক্ষণ অপেক্ষা করতে আমাদেরকে? আর কতক্ষণ মারতালি তোষামোদিতে লিপ্ত থাকবে গোটা জাতি? কখন আমরা নিজের সত্যকে তুলে ধরতে পারবো? জ্বি হুজুর, সম্বোধন আর কত? না বুঝে মারতালি কখন ই বা শেষ হবে এই সমাজে?
লেখকঃ
আবজাল আহমেদ জয়
শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ
বিভাগঃ রসায়ন
মোবাঃ ০১৯৯৯-২৬৯০৭৬
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply