কাপ খরা কাটলো না বাংলাদেশের এবারও। পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর যে স্বপ্ন ক্রিকেটাররা দেখেছিলেন, দেখেছিলেন ১৬ কোটি মানুষও সেটি স্বপ্নই রয়ে গেলো।
শুধু এশিয়া কাপই যদি ধরা হয়, ২০১২, ২০১৬…দুঃখের তালিকায় নতুন অন্তর্ভুক্তি ২০১৮! তামিম ইকবাল নেই, সাকিব আল হাসান নেই। পুরোপুরি ফিট ছিলেন না মুশফিকুর রহিমও। চোট, কন্ডিশন, দুবাই-আবুধাবি, টানা খেলার ধকল—অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশ উঠেছিল ফাইনালে। ইতিহাস তৈরি হয় প্রতিকূল পথ পেরিয়েই, এই সত্য মেনে বড় আশায় বুক বেঁধেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত প্রাপ্তি সেই স্বপ্নভঙ্গের যাতনা। এই যন্ত্রণা মাশরাফিরা বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই কবে থেকে। কে জানে বয়ে বেড়াতে হবে আরও অনেক দিন।
কে কাকে সান্ত্বনা দেবেন, কীভাবে দেবেন এই হারের ব্যাখ্যা? পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা তবুও চেষ্টা করেন যন্ত্রণা লুকিয়ে হারের ব্যাখ্যা দেওয়ার, ‘আমরা হৃদয় দিয়ে খেলেছি। শেষ বল পর্যন্ত লড়েছি। আমরা এটাই চেয়েছি।’
তবে মাশরাফিকে এও মানতে হলো, ‘ব্যাটিংয়ে যেমন ভুল করেছি, বোলিংয়েও।’ একটা-দুইটা ভুল নয়, অনেক ভুল। এত ভুল ফাইনালের মতো ম্যাচে করলে কীভাবে জেতা যায় শিরোপা? দুই ওপেনারের ১২০ রানের স্বপ্নিল শুরুর পর দলের স্কোর ২৫০ হয় না। লিটন দাসের ১২১ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও ভারতকে কঠিন লক্ষ্য ছুড়ে দেওয়া হয় না। বোলাররা কীভাবে লড়বেন ২২২ রান নিয়ে? তবুও লড়েছেন। ভারতকে ২২৩ করতে শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। মাশরাফির বড় তালি পাচ্ছেন তাঁর বোলাররা, ‘এই টুর্নামেন্টে যদি আমাদের বোলারদের দিকে তাকান, বেশির ভাগ সময়েই ২৪০ করে আমরা জিতেছি। ব্যাটসম্যানদের কাছে আজ এটাই চাইছিলাম। শেষমেশ বোলাররা সত্যি অসাধারণ করেছে।’
বোলাররা অসাধারণ করলেও বাংলাদেশকে দ্বিধায় ভুগতে হয়েছে শেষ ওভারের বোলিং নিয়ে। ১২ বলে ভারতের দরকার ছিল ৯ রান। আক্রমণে মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে আসেন মাশরাফি। মোস্তাফিজ ৩ রান দিয়ে একটা উইকেটও পান। শেষ ওভারে যখন ভারতের দরকার ৬ রান, মাশরাফির হাতে আর কোনো ধারালো অস্ত্র নেই। হয় মাহমুদউল্লাহ না হলে সৌম্য সরকার—দুই খণ্ডকালীন বোলার দিয়ে আটকাতে হবে দুই যাদব—কেদার ও কুলদীপকে। মাহমুদউল্লাহ খারাপ করেননি। তবু শেষ পর্যন্ত পারা যায়নি ১ বলে ১ রানের সমীকরণ আটকাতে। মোস্তাফিজকে কেন শেষ ওভারের জন্য রেখে দেওয়া হলো না, এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে আসবে। মাশরাফির ব্যাখ্যা, ‘আমিও আলোচনা করেছি বিষয়টা নিয়ে। ভারত যেভাবে রান করছিল মোস্তাফিজকে ৪৯তম ওভারেই আনা দরকার ছিল। ওরা প্রায় প্রতি বলে রান করছিল। এই পর্যায়ে আমি স্পিনার আনতে চাইনি। ওরা আজ খুব একটা ভালো করেনি।’
কথায় আছে- হয় আপনি জিতবেন, নাহয় কিছু শিখবেন। এই হার হয়তো কিছু শিক্ষাই দিয়ে গেলো আমাদের ক্রিকেটারদের। এবার দেখার বিষয়, এই শিক্ষা পরবর্তীতে কীভাবে কাজে লাগান তাঁরা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply