জোড়া মাথার যমজ রাবেয়া ও রোকেয়াকে আলাদা করা সম্ভব হয়েছে। গতকাল (২ আগস্ট) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হাঙ্গেরিয়ান সার্জনদের দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারে তাদের জোড়া মাথা আলাদা করা হয় বলে জানা গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, তিন বছর বয়সী রাবেয়া ও রোকেয়া বিরল ভ্রুণগত জটিলতায় ভুগছিল। সাধারণত এই ধরনের জটিলতা পাঁচ থেকে ছয় মিলিয়ন শিশুর মধ্যে একটি হতে পারে। চূড়ান্তভাবে মাথা আলাদা করার পর রাবেয়া ও রোকেয়ার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানান হাঙ্গেরিয়ান নিউরো সার্জন আন্দ্রেস সোকেই। হাঙ্গেরিয়ান চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশন (এডিপিএফ)’ এই অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে। আন্দ্রেস সোকেই জানান, রাবেয়া-রোকেয়ার অস্ত্রোপচারে হাঙ্গেরিতে পরিচালিত তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রক্রিয়াজাত করা কোষ ব্যবহার করা হয়েছে।
অস্ত্রোপচারের পর স্বস্তি প্রকাশ করেন রাবেয়া ও রোকেয়ার বাবা পাবনার রফিকুল ইসলাম। যমজ মেয়েদের জোড়া মাথা আলাদা করা সম্ভব হওয়ায় চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান রফিকুল। চিকিৎসকদের প্রশংসা করে রাবেয়া-রোকেয়ার বাবা বলেন, ‘আশা করি আমার মেয়েরা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। তারা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে এবং স্বাভাবিক একটি জীবন ফিরে পাবে।’
অস্ত্রোপচার শুরুর আগে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, ‘রাবেয়া ও রোকেয়া উভয় বাঁচার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। এডিপিএফ-এর তথ্য অনুযায়ী, জোড়া মাথার যমজদের আলাদা করার অস্ত্রোপচার খুব কমই সফল হয়।’
প্রসঙ্গত, হাঙ্গেরি ও তার বাইরে গরিব রোগীদের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের সুবিধা দিতে ২০০২ সালে এপিডিএফ প্রতিষ্ঠা করেন নিউরো সার্জন আন্দ্রেস সোকেই ও প্লাস্টিক সার্জন জার্জলি পাতাকি। ২০১৭ সালে এপিডিএফ-এর শরণাপন্ন হন রাবেয়া-রোকেয়ার বাবা-মা। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ঢাকায় প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। সেখানে ১৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় রাবেয়া- রোকেয়ার মস্তিষ্ক আলাদা করা হয়। তারপর গত জানুয়ারি থেকে ছয় মাস ধরে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে রাবেয়া-রোকেয়ার চিকিৎসা চলে। চূড়ান্ত অস্ত্রোপচারের আগে রাবেয়া ও রোকেয়াকে নিয়ে গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসে হাঙ্গেরির চিকিৎসক দল।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply