পড়াশোনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল লক্ষ্য। কিন্তু কেবলমাত্র পড়াশোনার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞানে থাকে বিস্তর ফারাক। বিভিন্ন সামাজিক পরিবেশ, কিংবা আনন্দ উৎসবে অংশগ্রহণ করলে যেমন অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়, তেমনি বাড়ে সামাজিক দক্ষতা।
গতকাল, ফেব্রুয়ারির তিন তারিখ এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ‘ব্যানার ডে।’ দিনটিকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই চলছিলো প্রস্তুতি, এবং ক্যাম্পাস জুড়ে উৎসব মুখর পরিবেশ।
ব্যানার ডে মূলত পালিত হয় প্রতি ছয় মাস অন্তর। এর আয়োজক ব্যাচ সবসময়ের জন্যেই চতুর্থ বর্ষ, প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা। তবে অংশগ্রহণ করে পুরো টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট। এ সময়ে ক্যাম্পাস ‘টেক্সটাইল, টেক্সটাইল’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে পড়ে।
গতকাল সকাল থেকেই সাজ সাজ রব ছিলো ক্যাম্পাসে। সিনিয়রদের সাথে জুনিয়রদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনে ক্যাম্পাস সাজানো, ছিলো চোখে পড়বার মতো। বিভিন্ন রঙ বেরঙ এর পোস্টারে, বেলুনে ছেয়ে যায় টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট।
ব্যস্ততার মাঝেই দুপুর গড়ায়, নেমে আসে বিকেল। ক্যাম্পাসের ঠিক মাঝের ছোট্ট খোলা মাঠটা ছেয়ে যায় লোকারণ্যে। সাজানো হয় গেইট- রঙ বেরঙ এর বেলুনে। গেইট দিয়ে ঢুকতেই বিশাল বড় সাইজের কেক। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ বিকেল প্রায় চারটার দিকে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থীরা দু পাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে। অতঃপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সুসজ্জিত ব্যানার নামানো হয় ডিপার্টমেন্ট থেকে, বিপুল করতালির মধ্য দিয়ে। কেক কেটে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে খাইয়ে দেন পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ। ক্যাম্পাসে আবেগঘন পরিবেশ নেমে আসে এই পড়ন্ত বিকেলে।
শখের ফটোগ্রাফাররা হয়তো অপেক্ষা করছিলো এমন একটি সময়ের জন্যেই। ফ্ল্যাশের আলোয় ক্ষণিকের জন্যে জ্বলে উঠছিলো, সবকিছু। ব্যানারটিতে মূলত উল্লেখ করা হয়- অতিশীঘ্রই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রোগ্রামের নাম, তারিখ। এবং সেই প্রোগ্রামকেই আলোকপাত করা হয়। এবারের অনুষ্ঠিতব্য ফেস্টিভ্যালের নামকরণ করা হয়েছে ‘টেক্স-ব্লাস্ট।’ এটি নবীনদের বরণ, এবং পুরোনো দের বিদায়ী অনুষ্ঠান।
কেক কাটার পর ছবি তুলতে পেরিয়ে যায় আরো বেশ খানিকটা সময়। বিকেল গড়িয়ে সময় গড়ায় সন্ধ্যায়। এত আনন্দের মাঝেও কিসের যেন একটা ছোট্ট চিনচিনে ব্যথা বুকের ভেতর কষ্ট দেয়। ব্যথাটা হারাবার। হাসিমুখে এতদিন মাথার উপর গাছের মত ছায়া দেয়া বড় ভাইদের বিদায় জানাবার ঘন্টা যে বেজে গেছে। মানুষগুলোর সাথে দেখা হবে না আগের মতো। চায়ের আড্ডায় পাওয়া যাবে না তাদের। হয়তো ছবিগুলোই হয়ে থাকবে একসঙ্গে হাসিমুখের স্মৃতিচিন্হ।
Leave a Reply