নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চে আল-নুরসহ দুটি মসজিদ হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই একই কায়দায় কয়েক ঘন্টা পরেই হামলা হয়েছে পূর্ব লন্ডনের এক ইমামের উপর। জানা গেছে, ইমামকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়েছে। তবে এখানে হতাহতের খবর পাওয়া গেলেও প্রাণনাশের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুর ১ টার দিকে পূর্ব লন্ডনের ক্যানন স্ট্রি রোডের একটি মসজিদের ইমামসহ কয়েকজনের উপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা বলে জানিয়েছে ইন্ডিপেডেন্ট।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদের ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর ঠিক কয়েক ঘন্টা পরেই পূর্ব লন্ডনের স্ট্রিট ক্যানন রোডের একটি মসজিদের সামনে ইমামসহ তিন জনের উপর হাতুড়ি দিয়ে যখম করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
বলা হয়েছে, হামলাকারীরা ওই মসজিদের ইমামের নীল কালারের গাড়িটিকে টার্গেট করছিলো। যখন ইমাম ওই গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিল ঠিক ওই মূহুর্তে হামলাকারী তার উপর অতর্কিত হাতুড়ি চালায় বলে জানিয়েছে প্রতক্ষদর্শীরা। হামলাকারীদের শিকার হন ২৭ বছরের এক যুবতী। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে ইমামের গাড়িকে লক্ষ্য করে তার উপর হামলার হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই হামলাকারীরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে হামলাকারী তিনজনই সাদা বরণের পুরুষ এবং তাদের বয়স প্রায় ২০ এর মতো।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের আল নুরসহ দুটি মসজিদে হামলার ঘটনায় ৪৯ জনের নিহত হওয়ার পর লন্ডন জুড়ে মসজিদগুলোত এক প্রকার আতঙ্ক কাজ করা শুরু হয়ে যায়। ওই হামলায় নিহতের প্রতি সমবেদনা আর ঘৃণা ছাড়া বিশ্ববাসী আর কিছুই ভাবতে পারছেনা।
নিউজিল্যান্ডের ওই হামলার পরই লন্ডন মসজিদগুলোর চত্বরে নিরাপত্তা বলয় জোরদার করা হয়। দুই মসজিদে নিহত মুসলিমদের প্রতি সমবেদনা এবং তাদের মাগফেরাত কামনার জন্য ঘোষণা দেয়া হয়। হামলার স্থানের পাশেই পুলিশ অফিসাররা অবস্থান করছিলেন। তবুও তারা বুঝতে পারেনি ওখানে হামলা হচ্ছে।
ইন্ডিপেন্ডেন্টকে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আমরা শুক্রবার ওই ঘটনার পরই দেশব্যাপী নিরাপত্তা জোরদার এবং নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। স্ট্রি ক্যাননের ইমামকে হাতুড়ি পেটানোর পরেই স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় বিক্ষোভে নামে এক পর্যায়ে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ করেন।
পূর্ব লন্ডনে নিযুক্ত সচিব সাজিদ জাভিদ বলেন, লন্ডন মসজিদে ইমামকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর ঘটনায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। লন্ডন মসজিদে এমন ঘটনা কাম্য নয় দ্রুতই আমাদের এই ধরণের হামলার হাত থেকে বাঁচতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানের সাথে এবং পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আবার যেন লন্ডন মসজিদে এ ধরনের হামলা করার সুযোগ না পায় সন্ত্রাসীরা। এছাড়াও লন্ডনের সব মসজিদের সুরক্ষার জন্য আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের নিয়ে বসেছি এবং খুব শিগরিই এসব হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনবো।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply