যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগে সমালোচনার মুখে পড়েছে সুইডিশ একাডেমি। একাডেমির এই সংকটের কারণ ফরাসি আলোকচিত্রী জাঁ ক্লোদ অ্যারানাল্ট।
এই সমালোচনার জের ধরে সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার এ বছর দেয়া হবে না বলে আজ শুক্রবার জানিয়েছে একাআডেমী। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সুইডিশ একাডেমি থেকে পদত্যাগ করা ছয় সদস্যের একজন কবি ক্যাটরিনা ফ্রসটেনসনের স্বামী ফরাসি আলোকচিত্রী জাঁ ক্লোদ অ্যারানাল্ট। তাঁর বিরুদ্ধে একাডেমির কর্মকর্তা, সদস্যদের আত্মীয়সহ একাধিক জনকে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগ ওঠে। অ্যারানাল্টের বিরুদ্ধে এই যৌন নিপীড়নের খবর প্রথম প্রকাশ করে সুইডেনের একটি সংবাদপত্র।
সুইডিশ একাডেমির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জনমনে আস্থার ঘাটতি থেকেই তারা এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বছর ২০১৮ ও ২০১৯ সালের দুটি পুরস্কার একবারে দেওয়া হবে। ১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার চালুর পর থেকে এ পুরস্কার ঘিরে এটাই সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি।
অবশ্য, একাডেমির কয়েকজন সদস্য যুক্তি দিয়ে বলেছেন ঐতিহ্য ধরে রাখা উচিত ছিল। কিন্তু অন্যদের মত হচ্ছে-একাডেমি পুরস্কার দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
১৯০১ সাল থেকে সাহিত্যে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার দিয়ে আসছে সুইডিশ একাডেমি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে সর্বশেষ ১৯৪৩ সালে পুরস্কার দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় পর আবারও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সুইডিশ একাডেমির ছয়জন সদস্য পদত্যাগ করেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান সারা ডানিয়াসও রয়েছেন। এই পদত্যাগের ঢলে ২৩০ বছরের পুরোনো এই প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রমে বড় ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। সুইডেনের সবচেয়ে সম্মানিত এই সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য নির্বাচন করা হয় অতি গোপনে। পরে সুইডেনের রাজা তাঁদের চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। ঐতিহ্যগতভাবে সদস্যরা আজীবন ওই পদেই অধিষ্ঠিত থাকেন।
চলতি বছর নোবেল সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন প্রতিষ্ঠানের বাকি ১০ জন সক্রিয় সদস্য।
গত নভেম্বরে হ্যাশট্যাগ ‘মিটু’ আন্দোলনে ১৮ জন নারী একজনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন। পরে ওই ব্যক্তি যে অ্যারানাল্ট, তা শনাক্ত করা হয়। ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি এসব যৌন নিপীড়ন চালান।
এই অভিযোগ প্রকাশের পর একাডেমির স্থায়ী সেক্রেটারি (যিনি পরে পদত্যাগ করেন) সারা ডানিয়াস বলেন, অ্যারানাল্টের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। একাডেমির স্টাফ ও সদস্যদের আত্মীয়রাও অ্যারানাল্টের ‘অনিচ্ছাকৃত অন্তরঙ্গতা’র শিকার হন।
শারীরিক নিগ্রহতা আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও বিষবাষ্পের মত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে শীঘ্রই এর লাগাম টেনে ধরতে হবে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারে ‘মি টু’ এর মতো কিছু আন্দোলন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply