ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই খাবারের তালিকায় কলা যুক্ত করা উচিত। অনেকে ভাবেন, কলা খেলে ওজন বাড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা উপায়ে কলা ওজন কমাতে সাহায্য করে। উপাদেয়, সস্তা, সারা বছর মেলে—এমন সবজি বা ফলের মধ্যে কলায় রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম। কলা শরীর ফুলে-ফেঁপে ওঠা ঠেকাতে পারে। তাই যাঁরা পেটের চর্বি কমাতে চান, তাঁরা খাদ্যতালিকায় কলা রাখতে পারেন।
পাকা কলা ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্প্রতি ওয়েট ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম অফ আটলান্টা তাদের একটি গবেষণাপত্রে জানিয়েছে এই তথ্য।
পাকা কলা যে শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী, তা জানেন অনেকেই। কিন্তু অনেকেই যা জানেন না তা হল, পাকা কলা ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্প্রতি ওয়েট ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম অফ আটলান্টা তাদের একটি গবেষণাপত্রে জানিয়েছে এই তথ্য।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, দৈনিক দু’টি পাকা কলা খাওয়ার অভ্যাস নানাভাবে উপকার করে শরীরের। সেই সমস্ত উপকারিতার মধ্যে রয়েছে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও ভুঁড়ি হ্রাস পাওয়ার বিষয়টিও। কীভাবে কলা ওজন কমাতে সাহায্য করে? গবেষণাপত্রে বলা হচ্ছে—
ফিটনেস ওয়ান্ডার: কলায় রয়েছে শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু ‘স্লিম উপাদান’। অর্থাৎ, কলার প্রোটিন শরীরকে ঠিক রাখে এবং পেটকে অনেকক্ষণ ভরা রাখে। তাছাড়া রক্তে চিনির মাত্রাও স্থিতিশীল রাখে। এর ফলে শরীরে মিনারেল এবং অন্যান্য উপাদান ঠিকমতো কাজ করতে পারে।
পেশীর জন্য ম্যাগনেশিয়াম: কলায় থাকা মিনারেল উপাদান ‘ম্যাগনেশিয়াম’ যা শরীরের পেশীকে প্রসারিত করে আর পাশাপাশি বিপাক ক্রিয়াকে সক্রিয় করে তোলে। এর ফলে অতিরিক্ত ওজনের মানুষ শারীরিকভাবে ভালো বোধ করেন।
মন ভালো করা হরমোন: মন ভালো করা হরমোন ‘সেরোটোনিন’-কে ভালো থাকতে সহায়তা করে কলায় থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড, যা ডায়েটিংয়ের সময়টুকুর জন্য খুবই জরুরি ৷ কারণ, সেসময় কম খাওয়ার কারণে মানুষের মেজাজ খারাপ থাকে। কিন্তু কলা তা হতে দেয় না। তাছাড়া কলা খেলে ভালো ঘুম হয় আর ঘুমের সময় শরীরের চর্বি ক্ষয়ের ক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে ওজন কমানো সহজ হয়।
পটাশিয়াম পেট কমায়: ফাঁপা বা অতিরিক্ত ফোলা পেটের জন্য কলা খুবই উপকারী। কারণ, কলায় থাকা পটাশিয়াম কোষের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরের তরল পদার্থকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া কলা একটু কাঁচা অবস্থায় খেলে তা পেটের গ্যাসকে দূরে ঠেলে দিতে সাহায্য করে। এর ফলে পেটের অতিরিক্ত ফোলা বা ফাঁপাভাব কমতে পারে।
শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে: কলায় রয়েছে পেকটিন পদার্থ, যা আঁশযুক্ত খাবারের সাথে মিশে হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং তা মলত্যাগের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা ডিটক্সিন বের করতে সহায়তা করে।
অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি কলা: ডায়েটিংয়ের সময় হালকা খাবার- যেমন মুরগীর মাংস, ছানা, দই, বাদাম, অল্প ভাত, গাজর, ব্রকোলি খাওয়া উচিত। আর এসবের পাশাপাশি প্রতিবেলায় একটি করে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা।
খোসাও খাওয়া যাবে: জাপানের বিজ্ঞানীরা এক নতুন জাতের কলা বের করেছেন, যেগুলো খোসাসহ খাওয়া যাবে। সেই কলার নাম মন্গি। এই কলার খোসা নরম ও খুব পাতলা আর মিষ্টি, যা সহজেই খাওয়া যায়। তবে স্বাদ কিছুটা আনারসের মতো। এই বিশেষ ধরনের কলার খোসায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, আঁশ এবং মিনারেল, যা ডায়েটিংয়ের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত।
অস্বাস্থ্যকর খাবারে লোভ কমাতে: পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার পরও বাইরের অস্বাস্থ্যকর তবে মুখরোচক খাবারের লোভ সামলাতে বেগ পেতে হয় অনেকেরই। বার্গার, পিৎজার কথা মনে করে জিভে জল আসা ঠেকানোর একটি কার্যকর উপায় কলা খাওয়া।
হজমে সহায়ক: হজমের জটিলতা ওজন বাড়ার একটি অন্যতম কারণ। পুষ্টিকর বিভিন্ন উপাদানের পাশাপাশি কলাতে থাকে ‘প্রো-বায়োটিন’ উপাদান যা অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়। যা পরোক্ষভাবে হজম প্রক্রিয়ার পরিচালনায সাহায্য করে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply