দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থল বন্দর হিলি। হিলি থেকে বাংলাদেশ অংশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভাল। তাই এই পথে সহজেই পণ্য আমদানি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যায়। তাই আমদানিকারকদের কাছে বন্দরটি বেশ জনপ্রিয়।
তবে হিলির সঙ্গে ভারতের অংশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় রফতানিকারকরা বিপাকে পড়েন। অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা না থাকায় জরুরি পণ্য নিয়েও গাড়িগুলোকে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে গাড়ির ভাড়ার পাশাপাশি অন্যান্য খরচও বেড়ে যায়। তাই ভারতের আমদানিকারকরাও পথটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এখন মাত্র দুইটি পণ্য রফতানি করা হয়। তা হলো তুষের তেল ও পানির পাম্প। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে বন্দরটি দিয়ে ১৭ লাখ ৫০ হাজার ১শ মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়েছে। এখন মাত্র দুটি পণ্য রফতানি হলেও আগে বন্দরটি দিয়ে চিটাগুড়, তুষের তেল, ঝুট কাপড়, প্লাস্টিকের ঝুড়ি (ক্যারেট), শ্যালোমেশিনের পাম্প, সিমেন্ট ও সুতা রফতানি করা হত।
আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছরেই ৪৪ লাখ ১৫ হাজার ১৬০ মার্কিন ডলার রফতানি করা হয়েছিল বন্দরটি দিয়ে। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন বলেন, ভারতে পণ্য রফতানির ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও কিছু কারণে সমস্যা হচ্ছে। বন্দরটির ভারতের অংশে ঊর্ধ্বতন শুল্ক কর্তৃপক্ষ নেই।
এছাড়া কোয়ারেন্টাইন অফিস না থাকায় কাচা পণ্য রফতানি করতে পারছি না। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ করছি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের সমস্যগুলো সমাধান করতে। সমস্যাগুলোর সমাধান হলে বন্দরটি দিয়ে কাঁচামরিচ, আলু, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি, তাঁতের শাড়ি, সিমেন্ট, রডও রফতানির সুযোগ তৈরি হবে।
রফতানিকারক রানা মল্লিক বলেন, হিলি বন্দর দিয়ে আগে কিছু খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য রফতানি হত। তবে এর মান নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর না থাকায় তা রফতানি হচ্ছে না। তাই পণ্য রফতানি করতে গেলে গাড়ি আটকিয়ে রেখে ডকুমেন্টস পাঠিয়ে দিচ্ছে কলকাতা ও দিল্লিতে।
সেখান থেকে অনুমোদনের জন্য তিন থেকে চারদিনের মতো সময় লাগে। এতে করে ট্রাকগুলোর অতিরিক্ত খরচ দিতে হয়। ফলে রফতানি খরচও বেড়ে যায়। তাই ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হওয়ায় খাদ্যদ্রব্য রফতানি হচ্ছে না তুষের তেল রফতানিকারক সিএন্ডএফ এজেন্ট হানিফ লস্কর বলেন, ভারতে চাহিদা বেশি থাকায় ভারতে তুষের তেল রফতানির ব্যাপক সুযোগ আছে।
তবে সেখানকার সড়কগুলো অপ্রসস্থ ও সরু। ভারতীয়রা পণ্য রফতানি করতে গেলে তাদের কাজ আগে করে দেওয়া হয়। তাদের কাজের অগ্রাধিকায় থাকায় বন্দরটি দিয়ে রফতানি করা হয় না। রফতানি একটি দেশের বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের প্রধান উৎস। এজন্যে সচল রাখতে হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বন্দরগুলো। ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে হিলি আবার রফতানির উপযুক্ত হয়ে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply