প্রশাসনের অনুরোধ উপেক্ষা করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যাওয়ায়, জম্মু কাশ্মীরের শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দলীয় শীর্ষ নেতাদের।
এদিকে, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর সাধারণ কাশ্মীরিদের বিক্ষোভে উত্তাল হয় রাজধানী শ্রীনগর এবং এর আশপাশের এলাকা। এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। আহত হয় বহু মানুষ। এর মধ্যেই কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাস্তায় নামেন কাশ্মীরের বহু মানুষ। তারা সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে কাশ্মীরিদের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ জানান। এসময় ভারত সরকারের বিরুদ্ধেও নানা স্লোগান দেন। কাশ্মীর ইস্যুতে সমর্থন দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে ধন্যবাদ জানান তারা।
একজন বলেন, ‘কোনও অবস্থাতেই আমার ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত মেনে নেবো না। এতে যদি প্রাণও যায়, তবুও আমাদের যুদ্ধ চলতে থাকবে। আমরা মোদিকে বলতে চাই, যেকোনো মূল্যে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করবো।’
আরো একজন বলেন, ‘আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সঙ্কটের সমাধান চাই। কিন্তু ভারত সরকার পুরো এলাকায় সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। কোন অবস্থাতেই তাদের কাছে আমার মাথা নত করবো না।’
কোন উসকানি ছাড়াই সাধারণ কাশ্মীরিদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বাধা দেয় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। টিয়ার সেল এবং রবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়। এসময় প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। আহত হন বহু কাশ্মীরি।
চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে কাশ্মীর সফর করছেন ভারতের বিরোধীদলগুলোর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা। সফরকারীদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, গুলাম নবী, সিপিএম নেতা, সীতারাম ইয়েচুরি, ডিএমকে নেতা তিরুচি সিবা, তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী’র মতো নেতারা। তারা আটক কাশ্মীরের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে জানা গেছে। তবে শুক্রবার এক বিবৃতিতে, শান্তি নষ্ট না করতে সফর থেকে বিরত থাকতে বিরোধীদের প্রতি অনুরোধ জানায় জম্মু কাশ্মীর কর্তৃপক্ষ।
জম্মু কাশ্মীরের মতো ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রতিবাদে, শুক্রবার বিক্ষোভ হয়েছে পাকিস্তানের করাচি, ইসলামাবাদ, মোজাফফরাবাদসহ বেশ কিছু শহরে। প্রতিবাদকারীরা কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানান। অবিলম্বে কাশ্মীর ইস্যুতে হস্তক্ষেপের জন্য তারা জাতিসংঘের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়।
কাশ্মীরের একজন বলেন, ‘কাশ্মীর ইস্যুতে একতরফা সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারত পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। তবে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষই এর জবাব দেবে।’
এদিকে শুক্রবার কাশ্মীর সীমান্তে পাক সেনাদের গুলিতে এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply