কাস্টমস কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত, যাদের মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব।
পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেয়া ছয় প্রতারক হলেন- নুরুল হক, শেখ আলম, ফিরোজ আলম, মোশারফ, মাসুদ রানা ও রেনু মিয়া ওরফে রনি।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার এসআই এসএম এলিস মাহমুদ আসামিদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, কাস্টমসে চাকরি দেয়ার কথা বলে আসামিরা গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন টোলারবাগ ২নং রোডস্থ বাংলাদেশ মেডিকেল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি লিমিটেডের গেটের সামনে মামলার বাদী মো. কৌশিক আহম্মেদের তার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো কাস্টমস কর্মকর্তা নন, সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্র। চক্রটি পাঁচ ভাগে বিভক্ত হয়ে অপারেশন চালায়।
সহকারী কাস্টমস কমিশনার, কমিশনারের ভাই, শ্যালক বা ভাগ্নে পরিচয়ে বিভিন্ন লোককে কাস্টমস বিভাগে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করত তারা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী চুক্তিবদ্ধ চাকরি প্রার্থীকে সুবিধাজনক জায়গায় দেখা করতে বলতো তারা। পরে সহকারী কমিশনারের র্যাঙ্ক-ব্যাজ লাগানো পোশাক (ইউনিফর্ম) পরে দামি ব্র্যান্ডের গাড়িতে প্রার্থীর সঙ্গে দেখা করতো। বিশ্বাস অর্জনের পর ভুক্তভোগীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের মুঠোফোন বন্ধসহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে হাওয়া হয়ে যেত। আবার তারা ছোট ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে কাস্টমসের আটক করা সোনার বার-বিস্কুট, জাপানি যন্ত্রাংশ, কটন সুতা, গোল্ডেন সুতা, সোনার চেইন, ল্যাপটপ, টিভি, মুঠোফোন ও কাগজসহ বিভিন্ন পণ্য কম দামে বিক্রির প্রস্তাব দিতো। টার্গেটকৃত ভুক্তভোগী প্রস্তাবে রাজি হলে ‘ভুয়া’ চুক্তিনামা তৈরি করে নির্ধারিত মূল্যের একটি অংশ আদায় করা হতো। পরে চুক্তির পণ্য সরবরাহ করার একটি কাল্পনিক তারিখ দিয়ে একপর্যায়ে এসে বলা হতো, চুক্তির আগে মোটা অঙ্কের টাকা পরিশোধ না করলে মালামাল সরবরাহ করা যাবে না। পরে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়তো তারা।
গত মঙ্গলবার রাতে মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে সহকারী কাস্টমস কমিশনারের দুটি র্যাঙ্ক ব্যাজ, সাদা শার্ট ছয়টি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২০টি ভিজিটিং কার্ড এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আটটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply