সাব্বির শাওন, বাগেরহাট প্রতিনিধি: রমজান ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র মাস। এ সময় সংযম সাধনের পাশাপাশি সুস্থ ব্যক্তির অনেকেই রোজা রাখেন, যারা অসুস্থ তাদের অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন রোজা রাখার কিন্তু রোজা রাখা উচিত হবে কি-না তা বুঝে উঠতে পারেন না। কেউ কেউ রোজা রাখার বিপক্ষে অজুহাত সৃষ্টি করেন এই বলে যে, রোজা রাখলে এসিডিটি বেড়ে যাবে_ দেখা দেবে গেসটিক আলসার।আবার অনেকে ওষুধ খেতে অসুবিধা হবে এমন কথাও বলে থাকেন। যারা অত্যধিক মোটা তারা স্লিম হওয়ার আশায় রোজা রাখতে উৎসুক হন। কিন্তু যারা রোগা তারা রোজা রাখার ব্যাপারে ততটা উৎসাহী না হয়ে হাজার ব্যাখ্যা দাঁড় করান। প্রকৃতপক্ষে রোজা নিয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ভাবনার শেষ নেই। রোজায় সেহরি, ইফতার ও শারীরিক সুস্থতা নিয়ে মানুষের মনে এ সময় থাকে অনেক জিজ্ঞাসা।
রোজায় সেহরি ও ইফতার কেমন হওয়া উচিত অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে রমজানে যে খাদ্যাভ্যাস লক্ষ্য করা যায়, তা পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এ সময়ে খাবারের প্রধান পর্যায় দুটি_ সেহরি ও ইফতার। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আমাদের দেশে সেহরি ও ইফতারের বেশির ভাগ খাবারই হচ্ছে উচ্চ চর্বিসমৃদ্ধ এবং তেলে ভাজা। সেহরি ও ইফতারের খাবার নির্বাচনে রোজাদারের বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় রাখা হয় না। কিন্তু এসব দিকে নজর দিতে হবে। প্রথমে সেহরির প্রসঙ্গে আসা যাক। মূলত বছরের ১১ মাস স্বাভাবিক নিয়মে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম হয়। তারপর হঠাৎ করেই সেহরি খাওয়ার নিয়মটি শুরু হয়। তাই এদিকে বিশেষ যত্ন না নিলে স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
স্বাভাবিকভাবে যে কোনো ধরনের খাবারই সেহরিতে খাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে_ খাবারটা যেন সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। ভাত বাঙালির মুখ্য খাবার। তাই সেহরিতে অবশ্যই সাদা ভাত রাখবেন। তবে ভাতের সঙ্গে রাখতে হবে উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন_ মাছ, মাংস ও ডিম। খরচ কমাতে চাইলে ভাতের সঙ্গে শুধু ডিম ও ডাল। ডাল উদ্ভিজ প্রোটিন বলে এতে ক্ষতিকর চর্বি নেই। সেহরির খাবার তালিকায় যে কোনো একটি সবজি থাকা বাঞ্ছনীয়। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, পেঁপে, করলা, আলু, টমেটো_ এর কয়েকটি বা যে কোনো একটি রাখলে চলবে। পাকস্থলিতে উত্তেজনা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে_ এমন কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয়। ইফতার প্রসঙ্গ বেশির ভাগ লোককে দেখা যায়, ইফতারের সময় গুরুপাক গোছের খাবার-দাবার খেতে। তারা মনে করেন, সারা দিন না খাওয়ার অভাবটুকু ইফতারে পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু এটা একটা ভুল ধারণা।
ইফতার শুরু করবেন শরবত দিয়ে। বাজারে অনেক কৃত্রিম রঙ মেশানো শরবত পাওয়া যায়, সেসব অবশ্যই পরিহার করবেন। ইফতারে ফলের রস বেশ উপকারী। বুট, ছোলা ও মুড়ি খেতে পারেন এ সময়। দই, চিঁড়া ও কলা খেলে ভালো। তবে প্রচলিত বেগুনি ও পেঁয়াজু সর্বদা পরিহার করবেন। তেলে ভাজা এসব খাবার স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটাতে পারে। তা ছাড়া খাবারগুলো পুরনো তেলে ভাজা হলে ক্ষতির পরিমাণটা বেড়ে যায়। তেল বারবার গরম করলে ক্ষতিকর পলিনিউক্লিয়ার হাইড্রোকার্বন তৈরি হয়, যার মধ্যে থাকে বেনজোপাইরিন। এটা ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। তাই ইফতারে খেজুর ও বিভিন্ন ফল রাখা ভালো। সেহরি এবং ইফতারির সময় প্রচুর পানি পান করবেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply