কুলাউড়ায় কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ, ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি

‘ধর্ষণের কথা প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দেবো, আমরা যখন ফোন দেবো তখন আসতে হবে’ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর এমনটি বলে হুমকি দিয়েছে ধর্ষকরা।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার আশুরিঘাট এলাকায় ১৭ বছরের এক গৃহকর্মী দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হয়।

ঘটনায় কিশোরীর পূর্ব পরিচিত শুকুর আলী (৩৫) নামে এক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কিশোরী। শুকুর আলী উপজেলার  গৌরী শংকর এলাকার মৃত আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী সিলেটের একটি  বাসায় গৃহপরিচালিকার কাজ করতো। তার বাড়ি ভূকশীমইল ইউনিয়নে। কিশোরীর মা, এক বোন ও এক ভাইকে নিয়ে কুলাউড়া পৌর শহরের আবাসিক একটি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন এবং গৃহপরিচালিকার কাজ করেন। পহেলা বৈশাখের আগের দিন শনিবার সিলেট থেকে ওই কিশোরী কুলাউড়ায় আসে।

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় মাকে বলে ওই কিশোরী বাসা থেকে নিজের গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এ সময় কিশোরীর পূর্ব পরিচিত শুকুর আলী নামের এক পরিচিত ব্যক্তি তাকে পৌর শহরের প্রধান সড়ক থেকে সিএনজি অটোরিকশায় জোর পূর্বক তুলে কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের আশুরীঘাট এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে আরও ৬জনসহ শুকুর আলী কিশোরীকে দলবদ্ধ হয়ে গণধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি মোবাইলে ধারণ করে। ধর্ষণের পর ধর্ষকরা হুমকি দিয়ে বলে ‘ধর্ষণের কথা কারো কাছে প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি ছেড়ে দেবো। আর আমরা যখনই ফোন দেবো তখনই আসতে হবে।’ এ সময় ওই কিশোরী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। ধর্ষকেরা শুকুর আলীর কাছে টাকা দিয়ে কিশোরীটিকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় পৌঁছে দিতে বলে।

পরে শুকুর আলী কিশোরীকে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসা দেওয়ার পর রাত  সাড়ে ১১টার দিকে বাসার সামনে এনে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত সিএনজি নিয়ে চলে যায়।

বিষয়টি পরিবারকে জানালে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে ধর্ষিতার মা কুলাউড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে প্রোগ্রাম অফিসার আমান উল্লা’কে বিষয়টি অবগত করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে প্রোগ্রাম অফিসার আমানউল্লা বলেন, ধর্ষণের আলামত পেয়েছি। ওই কিশোরীকে পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন  রয়েছে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় হাসান (২৪) নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। হাসান উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের গৌরীশংকর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।