শামিম হোসেন, গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর কানু মোল্লার বটতলা আড়ৎ। সেখানে লিচু, আম, কুল ও জামসহ বছর জুড়েই যাবতীয় ফল ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে। কানু মোল্লার বটতলার এই হাট্রে অধিকাংশ জায়গা খাস খতিয়ান ভুক্ত। প্রায় একযুগ ধরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহলের জোরেই রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে আড়ৎ গুলো। অথচ এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ কিছুই জানেন না।
নিয়ামানুসারে কোন হাট বা বাজার ইউনিয়ন পরিষদ অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ডাক (নিলাম) হয়ে সেটা সরকারী কোষাগাড়ে রাজস্ব জমা হওয়ার কথা। কিন্তু এই হাটে তা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- আড়তে আসা অসংখ্য ক্রেতা বিক্রেতা ট্রাক, লছিমন, করিমন রিক্সা ভ্যানের কারনে সড়ক জুড়েই সারাক্ষন লেগে রয়েছে প্রচন্ড যানজট। ফলে দুরের যাত্রীরা আটকে আছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। স্থানীয়দেরও পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। যেন দেখার কেউ নেই । এখানে সর্বমোট ১৫টি ফলের আড়ৎ রয়েছে। প্রতি দিন গড়ে ৮০ ট্রাক লিচু বিক্রি হয় প্রতি ট্রাকে দুই লক্ষ পিচ লিচু থাকে যার বাজার মুল্য প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। এসব লিচু ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশে সরবরাহ হয়ে থাকে। অথচ প্রশাসনের গাফিলতি স্থানীয় নেতাদের নানা কারসাজীর ফলে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বছরে কোটি টাকার রাজস্ব। শুধু তাই নয় এসব নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে চলছে দ্বন্দ্ব। যেটা নিয়ে যে কোন সময় ঘটতে পারে অনাকাক্ষিত ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী বলেন, প্রতি দিন গড়ে আমাদের ফল ভান্ডার থেকেই ১৫ লক্ষ টাকার লিচু বিক্রি করা হয়। ১৫টি ফল ভান্ডার মিলে প্রতি দিন প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার বাণিজ্য হয়। কিন্তু সরকার কোন রাজস্ব পায়না। কেন সরকার রাজস্ব পান না এব্যাপারে মুখ খুলতে না চাইলেও আবশেষে স্বীকার করলেন আড়তের সভাপতি মো,সাখাওয়াত মোল্লা এটা সরকারী হাট নয় ব্যক্তি মালিকানাধিন আড়ৎ।
আড়ৎ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মোল্লা জানান, প্রতিদিন গড়ে ৮০ ট্রাক লিচু বাহিরে যায়। প্রতি ট্রাকে ২ লক্ষ পিচ লিচু থাকে। যার বাজার মুল্য প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। স্থানীয় কিছু নেতা কর্মী ও আড়তের মালিক পক্ষ এগুলোর দেখভাল করে থাকে। সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত মোল্লা বলেন, এটা সরকারী হাট নয়। রাস্তার উপর এবং সামান্য খাস আর সম্পুর্নটাই ব্যাক্তি মালিকানা সম্পত্ত্বি। এজন্য কাউকে টাকা পয়সা বা ট্যাক্স দেওয়া হয়না।
গুরুদাসপুর উপজেলা সার্ভেয়ার মো.আমিনুল ইসলামের তথ্য মতে- ওই আড়তের মোট ৮০ শতাংশই খাস খতিয়ান ভুক্ত এবং বাঁকী ২০ শতাংশ ব্যাক্তি মালিকানাধীন সমপত্ত্বি রয়েছে।
নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এই হাট নিয়ে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করা হয়েছে আড়ৎদারদের সাথে। কিন্তু তারা সিদ্ধান্ত না মেনে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান বলেন,আমি নুতন এসেছি। বিষয়টি অবগত হয়ে ইতোমধ্যেই জায়গাটি পরিদর্শন করেছি । আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply