ঈদের সময়,ঈদ আনন্দের পাশাপাশি খাওয়ার অনিয়মের কারণে কিছু রোগ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যেতে পারে। তাই,ঈদের সময়টাতে খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমিত বোধ এবং সাবধান থাকার কোন বিকল্প নেই।কোরবানি ঈদে খাওয়ার অনিয়মে কারো যেন শারীরিক অবস্থার অবনতি যেন না ঘটে সে জন্য নীচের পরামর্শ গুলো মেনে চলতে পারেন।
সুস্থ থাকতে যেভাবে খাবেন ঈদের কয়দিন
• খাবার প্লেট ছোট সাইজের নিন।সম্ভব হলে কাটা চামচের সাহায্যে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
• খাবার গ্রহণের ৩০-৪৫ মিনিট আগে ধীরে ধীরে চিবিয়ে ১-১.৫ কাপ সালাদ খেয়ে নিন।
• যাদের,কুসুম গরম পানি খাবার অভ্যাস নেই তারা ঈদের ৬-৭ দিন কুসুম গরম পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। তবে,খাবার খাওয়ার ৩০-৪০ মিনিট আগে এবং পরে পানি খাওয়া ভাল।
• খাবার,খাওয়ার মাঝে পানি না খাওয়া হজমের জন্য ভাল।এ অভ্যাসটি সুস্থ এবং অসুস্থ সবার জন্য ভাল।
• ঈদের কয়দিন মিক্স সালাদ তেতুলের টক,লেবুর রস এবং গোল মরিচের গুড়া দিয়ে খেতে পারেন। সালাদ লবণ ছাড়া খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।
• প্রতিবেলাতে,মাংস বা মাংসের তৈরি আইটেম না খেয়ে একবেলা বাদ দিয়ে অন্য বেলায় খান।
• প্রতি বেলায়,কেবল এক ধরণের মাংসের আইটেম দিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
পাশাপাশি,প্রতিবেলার খাবার মেন্যুতে শাকসবজি এবং টক ফল রাখুন। এভাবে খেলে,মাংসের প্রতি অরুচি ধরবে না বা অসুস্থ হবেন না।
• ঈদের কয়দিন নিয়মিত টক দই বা টক দই দিয়ে সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করুণ।
• ঈদের কয়দিন শুধু মাংস না মাছ ও খেতে হবে।
• অতিরিক্ত,সাদা ভাত বা বিরিয়ানি খাবেন না।
অসুস্থ ব্যক্তি ঈদের সময় যেভাবে খাবেন
• যাদের,উচ্চ রক্তচাপ,হাইপার ইউরেসেমিয়া বা যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তাদেরকে গরুর মাংসের নানা পদের লোভনীয় হাতছানি অবশ্যয় উপেক্ষা করতে হবে।আর,যদি খুব খেতে ইচ্ছা হয় তবে সারাদিনে সামান্য পরিমাণে চর্বিবিহীন মাংস খেতে পারেন।
• যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা ঈদের কয়দিন ১টি করে কচি ডাবের পানি পান করতে পারেন।
• ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে চাইলে দিনের বেলায় খান।তবে, অল্প পরিমাণে খাবেন।
• যাদের,উচ্চ রক্তচাপ,হাইপার ইউরেসেমিয়া,কিডনির সমস্যা বা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আছে তারা অর্গান মিট সমূহ এবং নেহারি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
• ঈদের সময়টাতে পরিবারে যেসব সদস্যরা অপুষ্টিততে আক্রান্ত তাদের দিকে বিশেষ যত্ন দিন।তাদেরকে,সব ধরণের পুষ্টিকর খাবার দিন।
• যারা,সুস্থ আছেন তাদেরকে ও ঈদের কয়দিন বুঝে শুনে খেতে হবে।নাহলে,বদহযম, ডায়রিয়া সহ পেটের সমস্যাতে ভুগতে পারেন।
পরিবারের সদস্যদের সুস্থ রাখতে রান্নার সময় যে বিষয় গুলো খেয়াল রাখবেন
• কোরবানির মাংস রান্নার সময় মাংসের সাথে থাকা চর্বি কেটে ফেলুন।এরপর কুসুম গরম পানিতে মাংস ধুয়ে রান্না করুন।
• রান্নার সময় মাংস বা বিরিয়ানিতে অতিরিক্ত তেলের ব্যবহার পরিহার করুন।
• কম তেলে মাংস রান্না করুন।বাটা মসলার পাশাপাশি,একটু বেশি করে গোটা রসুন এবং গোটা আদা দিয়ে রান্না করুন।খাবার সময় প্লেটে একটু গোটা আদা এবং রসূন চিবিয়ে খান,হজম ভালভাবে হবে।
• ঈদের কয়দিন কেবল কষা মাংস বা ভুনা মাংস না রান্না করে মাংসের বেকড বা গ্রিল করে খেতে পারেন।
• ঈদের সময় এক তেলে কেবল এক বার রান্না করুন।এক তেল বারবার ব্যবহার করবেন না।
• ঈদের কয়দিন কেবল মাংসের আইটেম না,সবজি এবং মাছের আইটেম ও রাখুন খাবার তালিকায়।তাহলে,মাংসের প্রতি রুচি ওঠার মত অবস্থা হবেনা।
সবার ঈদ কাটুক আনন্দে এবং নিরাপদে।
লেখক : পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply