ডিজিটালাইজ করার অংশ হিসেবে জনগণকে সহজেই ভোট প্রদান করার সুবিধা দিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।এ লক্ষেই মোবাইলে ভোটিং প্রযুক্তি নিয়ে আসার কথাও ভাবছেন তারা।
সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউপি ভোট মোবাইলের ম্যাধ্যমে নেওয়ার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা।
পরিকল্পনাটি কমিশন সভায় প্রস্তাব করা হবে।কশিমন অনুমোদন দিলে পরে এটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে ইসি। সেক্ষেত্রে একটি নতুন প্রকল্প নেওয়া হতে পারে।
সূত্র জানায়, বর্তমান ভোট প্রদান ব্যবস্থায় দেশের প্রায় ৩০ ভাগ ভোটার তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ পায় না। অর্থাৎ চলমান পদ্ধতির কারণে ২০ হতে ৩০ শতাংশ ভোটার তাদের নাগরিক অধিকার হতে বঞ্চিত হয়। দেশের সংখ্যালঘু ও অসুস্থ ভোটারা যেন নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারে সে লক্ষে কাজ করবে ইসি।
তাছাড়া এ পদ্ধতির মাধ্যেমে একদিকে যেমন সকল ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারবে তেমন আরও অনেক সুবিধা সৃষ্টি হবে। এটি প্রথমে স্থানীয় নির্বাচনে ব্যবহারে সফল হলে পরবর্তিতে জাতীয় নির্বাচনেও ব্যবহার হবে।
জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যালট এবং ইভিএম দুটি ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ইভিএম ডিজিটাল পদ্ধতি হলেও কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হয়।
তাছাড়া ফলাফল কাগজের ম্যাধ্যমে উপজেলায় পাঠাতে হয়। নতুন পদ্ধতিতে কেন্দ্রে যেতে হবে না ভোটাররা ঘরে বসে মোবাইলে ভোট দিতে পারবেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল হচ্ছে। এ কারণে ইসি ভোট গ্রহণ ব্যবস্থাকে ডিজিটাল ও যুগ উপযোগী করার পরিকল্পনা করছে।
এদিকে বুধবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এ যুগে বিজ্ঞান সব কিছু সহজ করে দিয়েছে। মোবাইল ফোন থেকে টাকা পাঠানো যাচ্ছে। টাকা যেমন মানুষের প্রিয়, ভোটও প্রিয়। তাই ভোটও যেন মোবাইল থেকে দেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে ইভিএম হোক পরে মোবাইল ফোন থেকেও যেন ভোট দেওয়া যায় সেটি নিশ্চিত করতে ভাবতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন তো ডিজিটাল যুগ। তাই আমি ইভিএমে কোনো সমস্যা দেখি না। তবে, আগে ইভিএম হোক। আমরা এটি কেনার জন্য একনেকে পাস করে দিয়েছি। ইভিএম হোক এটি নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। এটা জনগণের ভোটের বিষয়কে সহজ করে দিয়েছে।’
ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং ভোট প্রক্রিয়া ডিজিটাল করতে ইসির পরিকল্পনায় যেসব বিষয় আনা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে:
১. রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ভোট প্রদানের জন্য সরকারিভাবে দশ আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংগতি রেখে এক ব্যক্তির নামে শুধুমাত্র ভোট প্রদানের জন্য নির্বাচন কমিশনের সার্বিক তত্বাবধানে যে কোন একটি কোম্পানির সিমের মাধ্যম ভোটারদের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
২. নির্বাচনের পূর্বে যে সকল ভোটার মোবাইলের মধ্যেমে ভোট দিতে চান তাদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে। ভোটারগণ ইসি সচিবালয় থেকে নির্দেশিত নাম্বারে (১২৩) এসএমএস প্রদান করবেন।
এনআইডি শাখার বিপরীতে ১ টি ডাইলগ বক্স প্রেরণ করবেন (জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বার, নাম ও জন্ম তারিখ) ভোটার ডাইলগ বক্স পূরণ করে এনআইডি শাখার নাম্বারে এসএমএস প্রদানের পর এনআইডি শাখা অটোমেটিক ভোটারদের একটি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার প্রদান করবে যা ভোটারগণ ভোট গ্রহণের দিন ভোট প্রদানে ব্যবহার করবে।
৩. নির্বাচন কমিশন রেজিস্ট্রেশনের জন্য একটি টাইম লাইন প্রদান করবেন। টাইম লাইনের মধ্যে যে সকল ভোটার রেজিস্টেশন করবেন তাদের নাম বাদ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন অফিসার কর্তৃক ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারে জন্য ভোটার তালিকা মুদ্রণ করবেন। কোন কারণে মোবাইল কাজ না করলে রেজিস্ট্রেশনকৃত ভোটারদের জন্য একটি আলাদা তালিকাও মুদ্রণ করা যেতে পারে।
৪. ভোটরগণ রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ও জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার উল্লেখ করে পছন্দকৃত প্রতীকে ভোট প্রদান করবেন। সার্ভারটি উপজেলা অফিসের হলরুমে থাকবে।
এই হল রুমে সকল প্রার্থী প্রথমে নিজ নিজ ভোট প্রদান করবে এবং ভোটার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবেন। উপজেলা অফিসার বিকেল ৪টায় প্রার্থীদের ফলাফল হাতে দিবেন।
৫. কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ভোটকেন্দ্রের প্রার্থী কর্তৃক অবশ্য নিয়োগকৃত নির্বাচনী এজেন্টের নিকট ম্যানুয়েল ভাবে প্রাপ্ত ভোটার ফলাফল বিবরণী প্রদান করবেন। পিজাইডিং অফিসার কর্তৃক কেন্দ্রের ফলাফল রিটার্নিং অফিসারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply