রাজধানীর শ্যামলীর একটি অফিসে চাকরির সাক্ষাৎকারের সময় তরুণীকে অজ্ঞান করে গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি ফাহিম আহমেদ ফয়েজকে (৩০) তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেস চৌধুরী রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (ওসি) আবুল কালাম আজাদ আসামি ফাহিম আহমেদ ফয়েজকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তি দেখে চাকরির আবেদনের পর ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার তরুণী শেরেবাংলা নগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার পর ফাহিম আহমেদ ফয়েজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় নাহিদ নামে আরও একজন পলাতক।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুনশী বলেন, মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত দু’জনের মধ্যে ফয়েজ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য তার রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে মঞ্জুর হয়েছে। এছাড়া নাহিদ নামে আরেক আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে, হেলথ ভিশন নামে ওই প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে সব জানা যাবে।
মামলার এজাহার তথ্য মতে, তরুণীর সঙ্গে এক বছরের পরিচয় নাহিদ পাটোয়ারীর(৩২)। সেই সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যোগাযোগও ছিল। গত ২৭ আগস্ট(মঙ্গলবার) দুপুর ২টার পর ফোনে কল করে ওই তরুণীকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকে। মুঠোফোনে কল পেয়ে মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে শ্যামলী ৩নং সড়কের ৩৫/১/বি ভবনের ৫তম তলায় হেল্থ ভিশন নামে অফিস কাম বাসায় যায়। শ্যামলী প্রধান সড়ক থেকে ওই তরুণীকে রিসিভ করে নিয়ে যায় নাহিদ। একটি চেয়ারে বসতে দিয়ে চাকরি বিষয়ক প্রশ্ন করে। এরপর সিগারেট ও ওয়াইন খাওয়ার অফার করে নাহিদ। খেতে রাজি না হওয়ায় চালাকি করে কোকাকোলার সাথে ওয়াইন মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। এরপর শারীরিকভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে প্রথমে ফাহিম আহমেদ ফয়েজ(৩০) ও পরে নাহিদ পাটোয়ারি (৩২) ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ঘটনায় চেতনা হারায় তরুণী। চেতনা ফেরাতে তরুণীর চোখেমুখে পানি দেয়। পরে ধর্ষণে জড়িত দু’জনকে হাতেপায়ে ধরে অনুরোধ করে সন্ধ্যার পর সেখান থেকে মুক্তি পান চাকরি প্রত্যাশী সেই তরুণী।
শ্যামলী ৩নং সড়কের ৩৫/১/বি ভবনের মালিক না থাকায় মালিকের স্ত্রী ও পরিবার কথা বলতে রাজি হননি।
তবে ভবনের দারোয়ান শহিদুল ইসলাম জানান, ৫ম তলার ওই কক্ষটি পরিবার নিয়ে থাকার জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন ফয়েজ। কিন্তু সেখানে তারা বাসার পাশাপাশি অফিসও চালিয়ে আসছিল। হেপাটাইসিস বি টিকা বিক্রি ও বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করতো বলে জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী শেরেবাংলা নগর থানার এসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগ গত মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে ঘটনা ঘটে। আমরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেটা যাচাই বাছাই চলছে। প্রাথমিকভাবে ভবনটিতে পলাতক নাহিদের সাথে ওই তরুণীকে ঢুকতে দেখা গেছে।
অপরদিকে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ভুক্তভোগী ওই তরুণীর ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে ঘটনার ওই ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন।
সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন
Leave a Reply