ছোলা সাধারণত বাজারে দু ধরনের দেখতে পাওয়া যায়-কালো রঙের দেশী ছোলা ও সাদা রঙের বড় বড় কাবুলি ছোলা।
আয়ুর্বেদ মতে : ছোলা লঘু, উষ্ণবীর্য(শরীর গরম করে-কড়া), বল ও বায়ুবর্ধক। শ্বাস, কাশি, কফ, ও রক্তপিত্ত উপশম করে।
প্রতিদিন সকালে ভিজে ছোলার জল বা অন্কুরিত ছোলা আদা নুন দিয়ে খেলে পিত্তের বিকার, পিত্তের জন্যে যে জ্বর হয় সেই জ্বর, সারে। শুকনো্ ছোলা ভাজা রুক্ষ, বায়ুর প্রকোপ করে, কফ ও শৈত্য নাশ করে। কাঁচা সবুজ ছোলা ভাজা গুরুপাক ও শরীরের বল বৃদ্ধি করে।
ছোলা ভাজার শুকনো ছাল ছাড়িয়ে ছোলার ডাল তৈরি করা হয়।ছোলার ডাল পিষে বেসন তৈরি করা হয়। বেসন দিয়ে কত বিবিধ রকমের নোনতা খাবার, তেলে ভাজা বেগুনি থেকে আরম্ভ করে ডালমোট বা চানাচুরের কাঠি ভাজা পর্যন্ত তৈরি করা হয় সে তো সকলেরই জানা। মিষ্টি ও তৈরি হয় নানা রকম-পেস্তা বাদাম এলাচ গুড়ো ইত্যাদি মিশিয়ে ঘিয়ে ভাজা ও চিনি মেশানো বেসন দিয়ে তৈরি করা হয় লাড্ডু। বেসন দিয়ে তৈরি করা হয় বোঁদে, মিহিদা্না, মোতিচুরের লাড্ডু।
স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ছোলা:
১। অন্য কোনো ওষুধ না পাওয়া গেলে এক মুঠো শুকনো ছোলা ভাজা খেয়ে এক গ্লাস গরম জল পান করলেও নির্বলতা অর্থাৎ পুরুষদের ধাতুক্ষীণতা দূর হবে।
২। রাত্তির শুতে যাওয়ার আগে শুকনো ছোলা ভাজা খেলে তারপরে এক গ্লাস দুধ খেলে শ্বাসনালিকায় জমে থাকা কফ একত্রিত হয়ে সকালবেলা বেরিয়ে যায়।
৩। রাত্তিরে শুতে যাওয়ার আগে একটু ছোলা ভাজা খেয়ে জল খেলে কাশি অনেক সময় কমে।
৪। শুতে যাওয়ার আগে ছোলা ভাজা খেলে এবং তারপরে গরম জল খেলে গলা বসে যাওয়া সেরে গিয়ে গলার আওয়াজ পরিষ্কার হয়।
৫। ছোলার সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খেলে গলার স্বর সুরেলা হয়।
৬। গরম গরম ছোলা ভাজা খেলে অর্শ থেকে রক্তস্রাব বন্ধ হয়।
৭। বেশি মিষ্টি খেলে অন্ত্রে ছোট ছোট কৃমি জন্মায় আর ভীষণ পেট ব্যথা করে, পেট কামড়ায়। এই রোগে যাঁরা ভুগছেন তাঁরা যদি এক মুঠো ছোলা ভিনিগারে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা খালি পেটে খেয়ে নেন-তাহলে কৃমি মরে যাবে আর পেট ব্যথাও সারবে।
৮। গরম গরম ছোলা ভাজা শুঁকলে সর্দি সেরে যায়।
৯। বেসন জলে গুলে শরীরে মালিশ করে তারপর স্নান করলে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয়। ত্বক পরিষ্কার হয়। চুলকুনি সারে।
১০। ত্বক শুষ্ক থাকলে বেসনের সঙ্গে টক দই মিশিয়ে মালিশ করুন-চামড়া চকচক করবে।
১১। বেসন জলে গুলে মাখা ধুয়ে ফেললে মাথার চুলকুনি ও ফুস্কুড়ি সেরে যাবে।
১২। বেসনে ঘি মিশিয়ে শরীরে মালিশ করলে শরীর গৌরবর্ণ হয়। চেহারা তেজস্বী হয়।
১৩। মুখে বেসনের মালিশ করলে মুখের কালো ছোপ দূর হয়ে গিয়ে ত্বক নরম ও কোমল হয়।
১৪। বেসনে জলে গুলে মধু মিশিয়ে লাগালে পুরুষদের অন্ডকোষের স্ফীতি বা ফুলে ওঠা কমে।
১৫। গুড়ের গরম রসে শুকনো ছোলা ভাজার খোসা মিশিয়ে বাধঁলে মচকানির ব্যথা উপশম হয়।
ছোলা খাওয়ার কিছু অপকারিতা ও আছে। ছোলা কুষ্ঠের প্রকোপ ও পাথরি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি করে। যাঁরা এই সব অসুখে ভুগছেন তাঁদের ছোলা না খাওয়াই ভাল। বেশি ছোলা খেলে পেটে বায়ু হয়। ছোলা রুক্ষ, মলাবরোধ করে। সেইজন্যে আহারে ছোলার পরিমাণ যাতে বেশি না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply