টঙ্গীর আফতাব প্লাজায় পোদ্দার জুয়েলারি স্টোরের কর্ণধার প্রদীপ পোদ্দার। জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে গড়ে তোলেন ডাকাত চক্র। চক্রের সদস্যরা কেউ গ্রেফতার হলে তাদের আইনি সহায়তা দিতে নিয়োগ করেন উকিল।
আয় না থাকলে সদস্যদের বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তাও দিতেন তিনি। এছাড়া, অন্যান্য চক্রের ডাকাতি হওয়া মালামালও কম দামে কিনে রাখতেন প্রদীপ পোদ্দার।
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) দিনগত রাতে প্রদীপ পোদ্দারসহ (৪১) এই চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করা বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।
অন্য আটকেরা হলেন- দুলাল হোসেন (৩০), রাসেল (২২), জাকির হোসেন (২৬), কোকিলা বেগম ওরফে প্রেরণা ও হাজেরা বেগম।
শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকার উত্তরা ও গাজীপুর এলাকার বিভিন্ন বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে এই চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়।
চক্রের মূলহোতা প্রদীপ পোদ্দারের টঙ্গীর আফতাব প্লাজায় একটি জুয়েলারির দোকান আছে। এর আড়ালে গড়ে তোলেন একটি ডাকাতি চক্র। যাদের কাজ না থাকলে আর্থিক সহায়তা দেন প্রদীপ। ডাকাতির সময় কেউ গ্রেফতার হয়ে গেলে তাদের আইনি সহায়তার জন্য উকিল নিয়োগসহ তাদের পরিবারের দায়িত্বও নিতেন তিনি।
একাধিক চক্রের ডাকাতি করা মালামালও স্বল্প মূল্যে কিনে রাখতেন প্রদীপ। এছাড়া, গত প্রায় ১০ বছর ধরে নিজে ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি ইয়াবা ব্যবসাও চালিয়ে আসছিলেন।
র্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, আটক দুলাল পেশায় একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তিনি উত্তর বাড্ডা থেকে গার্মেন্টস পণ্য কিনে গাজীপুর ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন। এই সুযোগে বিভিন্ন বাসায় ঢুকে বাসার সদস্যদের গতিবিধি লক্ষ্য করতেন। যেসব বাসা বন্ধ থাকতো সেসব বাসার দরজা ভেঙে চক্রের অন্য সদস্যদের সহায়তায় ডাকাতি করতেন। কোনো বাসায় কম সদস্য থাকলে তাদের বেঁধে মালামাল লুট করে নিতেন।
কিছুদিন আগে টঙ্গীর একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির সিসিটিভি ফুটেজে দুলালকে দেখা গেছে। তিনি ইতোপূর্বে একাধিকবার গ্রেফতার হন এবং প্রায় আড়াই বছর কারাভোগ করেন। এরপর জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজ শুরু করেন।
রাসেল, জাকির এই চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা অসংখ্যবার চুরি-ডাকাতিতে অংশ নেন।
দুলালের স্ত্রী কোকিলা এবং দুলালের মা হাজেরাকেও আটক করা হয়েছে। কারণ তারা ডাকাতিকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি ডাকাতি করা মালামাল নিজেদের কাছে সংরক্ষণ করে রাখতেন।
চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান সারোয়ার বিন কাশেম।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply