বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে অপরিনত বয়সের ৩১টি শিশুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. মিজান বাদী হয়ে সোমবার রাতে কোতয়ালী মডেল থানায় এ মামলাটি করেন।
কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে ৩১ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মিজান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে এসআই মো. সাইদুলকে। দ্রুত তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ গুগলে বেস্ট টয়লেট পেপার লিখে সার্চ, আসছে পাকিস্তানের পতাকা
৩১ নবজাতকের মরদেহের সুরতহাল করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। মরদেহগুলো হাসপাতালের হিমঘরে রাখা আছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. খুরশিদ জাহান এবং ওই বিভাগের ওয়ার্ড ইনচার্জ নার্স জোসনা বেগমকে সাময়িক বরখাস্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন।
এর আগে, সোমবার রাত ৯টার দিকে এই মরদেহ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া যায়। পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহগুলোর সুরতহাল শুরু করে।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, এই ভ্রুণগুলো ২৫/৩০ বছর আগের। এগুলো শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ছিল। এগুলো আর গবেষণার উপযুক্ত না থাকায় তা ডাস্টবিনে ফেলা হয়েছে। যেটা উচিৎ না। এই বিষয়টিতে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান দায়ী। তাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের লোকজন ময়লা পরিষ্কার করতে এসে এখানে অনেক ভ্রুণ পড়ে থাকতে দেখে। বিষয়টি হাসপাতালের লোকজনকে জানালে তারা এখানে এসে মাটি খুড়ে চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে শত শত মানুষ ভিড় করে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, কলেজের গাইনি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মৃত শিশু এবং মানবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষিত থাকে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে শেখানোর জন্য এগুলো ব্যবহার হয়।
তিনি আরো বলেন, এগুলো আর গবেষণার উপযুক্ত না থাকায় তা ডাস্টবিনে ফেলা হয়েছে। যেটা উচিৎ না। এর দায়ভার আমিও এড়াতে পারি না। এই বিষয়টিতে
হাসপাতালের গাইনি বিভাগ দায়ী। তাইঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply