সাধারণত দু ধরনের ডুমুর পাওয়া যায় গোল ডুমুর ও যজ্ঞ ডুমুর। যজ্ঞ ডুমুরের পাতা গোল ডুমুরের পাতার চেয়ে বড় আর খসখসে হয় বলে একে খরপত্রী ও বলা হয়। গোল ডুমুর দামে সস্তা এবং ডালনা ছেঁচকি ও শুক্তো প্রভৃতি খাওয়া হয়। কিন্তু ডুমুর কাটতে বেশি লাগে বলে আজকের ব্যস্ততার দিনে রান্না ঘরে এর আগমন ক্রমশই কমে যাচ্ছে। তবু ও কষ্ট করে কেটে রান্না করে খেলে অনেক রোগের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। দামি টনিকের চেয়ে অনেক উপকারী, অনেক সস্তা এবং অনেক স্বাদ ও বটে।
নানা রোগ সারাতে প্রায় অব্যর্থ ডুমুরঃ-
১। ডুমুর পিত্ত ও আমাশার অসুখ সারিয়ে দেয়।
২। ডুমুরে যথেষ্ট লোহা আছে সেইজন্যে রক্তপিত্ত(স্কার্ভি), রক্তপ্রদর, রক্তপড়া অর্শ, রক্তপ্রস্রাব ও রক্তহীনতা(অ্যানিমিয়া) রোগে উপকারী।
৩। জ্বরের পরে দুর্বলতা সারাতে টনিকের কাজ করে(এই সময় প্রতিদিন নিয়ম করে ডুমুরের তরকারি খেতে হবে।
৪। রক্তপ্রদর রোগে অর্থাৎ মেয়েদের অত্যাধিক ঋতুস্রাবে কচি ডুমুরের রসে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। দুধ ও চিনি সঙ্গে ডুমুরের রস মিশিয়ে খেলে ও এই রোগের উপশম হবে
৫। কচি ডুমুরের রসে মিশ্রি মিশিয়ে দিনে দুবার ১ চা চামচ ডুমুরের রস বা অর্ধ চা চামচ মিশ্রি গুঁড়ো খেলে মুখ থেকে রক্ত ওঠা বন্ধ হয়। তিন দিন এইভাবে ডুমুরের রস খেতে হবে।
৬। ডুমুরের রসে মধু মিশিয়ে খেলে রক্তপিত্তের স্কার্ভি রোগের রক্তপড়া বন্ধ হয়।
৭। পুরোনো জীর্ণ রোগে এবং যৌন ব্যাধিতে ডুমুর খেলে আহার ও ওষুধ দু রকমেরই কাজ হয়।
৮। ডুমুর সব রোগেরই উৎকৃষ্ট পথ্য শুধু কোষ্ঠবদ্ধতা বাদে।
৯। আমাশা রোগে ডুমুর পাতার একটি কুঁড়ি আতপ চালের সঙ্গে চিবিয়ে খেলে রোগের উপশম হয়। এইভাবে তিনদিন খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
১০। ডুমুর গাছের ছাল থেঁতো করে মিশ্রির পানায় মিশিয়ে ভাল করে চটকে ছেঁকে খেতে হবে। প্রতিদিন ২ বেলা ২ চা চামচ করে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে সাদা আমাশা রক্ত আমাশা সারবে।
১১। যদি মাথা ঘোরে তাহলে ভাতের পাতে প্রথমে এক চা চামচ দুর্বা ঘাস ভাজা খেয়ে তার পরে বীজ বাদ দিয়ে ডুমুর ভাজা খেলে উপকার হয়।
১২। হেঁচকি উঠলে ডুমুর চাকা চাকা করে কেটে কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে আধঘন্টা পর পর ১ চা চামচ করে সেই জল খেলে চার পাচঁবার খাওয়ার পরই হেঁচকি ওঠা বন্ধ হবে।
১৩। বহুমূত্র রোগে ডুমুর গাছের মুলের রস খুবই উপকারী। তবে উপকার পেতে হলে অনেকদিন ধরে খেতে হবে।
১৪। যজ্ঞ ডুমুরের রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে মেয়েদের প্রদর রোগ সারে।
১৫। দাদখানি চালের সঙ্গে যজ্ঞ ডুমুর ভাতে হিসেবে মেখে খেলে বহুমূত্র অর্থাৎ ডায়বেটিস রোগে উপকার হয়।
দ্রষ্টব্য :
ডুমুরের অশেষ উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও এতে লোহা বেশি আছে বলে অধিক মাত্রায় খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। কিন্তু প্রতিদিন ভোরে খালি পেটে একগ্লাস জলে একটি পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে আর এ সমস্যা থাকবে না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply