নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ শেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক তার আগের রূপে ফিরে এসেছে। কৃত্রিম যানজটের কারণে সেই চিরচেনা রূপে আর্বিভূত হয়েছে দেশের লাইফলাইন খ্যাত এ মহাসড়ক।
গত দু’দিন ধরে যানজটের মাত্রা একটু একটু করে বাড়তে থাকলেও বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) ভোর থেকে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির জিংলাতলী থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৬৭ কিলোমিটার অংশ যানজটের কবলে। ফলে এক কি. মি. সড়ক অতিক্রম করতে অনেক ক্ষেত্রে সময় লাগছে এক-তিন ঘণ্টা।
গত দু’দিনে শুধুমাত্র কুমিল্লা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগছে গড়ে ৮/৯ ঘণ্টা। এতে করে ফোরলেনের সুবিধার বদলে মহাভোগান্তি দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায় রয়েছে ২৫ কি. মি. যানজট। দাউদকান্দির গোমতী সেতুর টোলপ্লাজা থেকে জিংলাতলী পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
কুমিল্লা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়া কুবি শিক্ষার্থী শাহাদাত জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বাসে উঠেছি। ঢাকায় পৌঁছাতে ১২ ঘণ্টা সময় লেগেছে। অসহনীয় ভোগান্তি দেখার কেউ নাই।
বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় কুমিল্লা থেকে বাসে উঠেছেন ডা. রাসেল। তিনি জানান, এক জায়গায়ই বসেছিলেন প্রায় ২ ঘণ্টা। এমন ভোগান্তি আর কতদিন পোহাতে হবে?- আক্ষেপের সঙ্গে প্রশ্ন করেন ওই যাত্রীর।
মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাঁচ কারণে মহাযানজটে সৃষ্টি হচ্ছে এ মহাসড়ক। প্রথমত, দাউদকান্দি টোলপ্লাজা ও মেঘনা সেতুতে টোল আদায়ে ধীরগতি, টোল আদায়কারীদের সঙ্গে অতিরিক্ত টোল আদায় নিয়ে মালবাহী যানবাহন চালক-হেলপারদের কথা কাটাকাটিতে দীর্ঘ সময় পার করার ফলে সেতুর দু’পাশে লম্বা সারি সৃষ্টি হয়। এতে যানজট বাড়তে থাকে দু’পাশে।
দ্বিতীয়ত, মহাসড়কে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মালবাহী যানবাহন। গত দু’য়েকদিনে মালবাহী যানবাহনের সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। ফলে যানজটও বেড়েছে।
তৃতীয়ত, মেঘনা সেতুর পাশে সড়ক কাজ হচ্ছে, দ্বিতীয় সেতুর কাজ চলছে। এর ফলে কয়েকমাস ধরে এক লেনে গাড়ি বন্ধ রেখে আরেক লেন ছাড়া হয়। আর ঈদ উপলক্ষে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়ে যাওয়ায় তা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। ফলে এখানেই সময় ব্যয় হচ্ছে ৩/৪ ঘণ্টা।
চতুর্থত, ট্রাফিক সপ্তাহে মামলার ভয়ে ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো সড়কে নামানো হয়নি। কিন্তু গত দু’য়েকদিনে এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচল শুরু করেছে।
পঞ্চমত, মহাসড়কে কোরবানির গরুবাহী যানবাহনের সংখ্যাও অধিক হারে বেড়েছে। যা আগামী কয়েকদিনে আরো বাড়বে। ফলে যানজট আরো তীব্র হবে।
সব মিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রা সুখের বদলে মহাভোগান্তিতে রূপ নিচ্ছে।
সম্প্রতি শেষ হল নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ। তবে এর সুফল কেউ পেলো কি? সপ্তাহ শেষে আবার অনিয়মের কবলে জনসাধারন, নেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। ফলে পরিস্থিতির তিলমাত্র উন্নয়ন হয় নি।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply