দুয়ারে কড়া নাড়ছে মধুমাস জ্যেষ্ঠ। বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল বাজার মাতানোর আগেই রীতিমতো কাঠ ফাটিয়ে দিচ্ছে গ্রীষ্মের তাপদাহ। অবশ্য দুঃসহ গরমে রোজাদারদের ইফতারের তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গই হয়ে উঠেছে রসালো তরমুজ।
ইফতারে এক ফালি তরমুজ বা তরমুজের শরবত প্রশান্তির পাশাপাশি দেহ-মনকে সজীব সতেজ করে তোলে। তবে এখন ইচ্ছা করলেই ইফতারের আইটেমে অনেকেই রাখতে পারছেন না স্বস্তিদায়ক এ ফল। দামের আগুনের কারণে রসালো এ ফল না কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে রোজাদারদের।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে নগরীর নতুন বাজার এলাকায় তরমুজের দোকানগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেলো। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। সাধ আর সাধ্যের ফারাকের মধ্যেও প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, গ্রীষ্মের রসালো শাঁসালো ফল আম, জাম, লিচু ও কাঁঠাল এখনো ময়মনসিংহের বাজারে উঠেনি। ফলে বাজারে মৌসুমি ফলের মৌ মৌ ঘ্রাণ নেই। তবে গোটা বাজারই দখল করে আছে বিদেশি ফল। দেশীয় ফল বলতে বাজারে তরমুজের চাহিদার কোনো ঘাটতি নেই।
দিনমান চৈত্র্যের কাঠফাটা রোদ শেষে সন্ধ্যায় ইফতারে গরমের ক্লান্তি দূর করতে তরমুজের বিকল্প নেই। তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি রক্তস্বল্পতাও দূর করে তরমুজ। তবে গোল বেঁধেছে দামে। বড় বা ছোট বলে কথা নেই, তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে।
সাধারণত বড় বা ছোট আকারে হিসাব করে তরমুজ বিক্রি হলেও এবারই প্রথম নগরীর এ বাজারে কেজি হিসেবে তরমুজ কিনতে হচ্ছে রোজাদারদের।
নগরীর আকুয়া চৌরঙ্গি মোড় এলাকার রিকশাচালক আব্দুস সাত্তার (৪০) বাজারে বাহারি ফলের মধ্যে রসালো ফল তরমুজ কিনতে এসেছেন। নগরীর নতুন বাজার ফলের দোকানে ব্যবসায়ীরা তরমুজের দাম হাঁকানোতে চোখ কপালে উঠেছে সাত্তারের। মোটামুটি আকারের তরমুজের দাম এসেছে ২৪০ টাকা।
শেষ পর্যন্ত সন্তানের বায়না মেটাতে ১২০ টাকায় দুই কেজি অর্থাৎ অর্ধেকটা তরমুজ কিনেই বাড়ি ফিরতে হলো তাকে। আক্ষেপ করে সাত্তার বলছেন, ফল হিসেবে তরমুজই আছিল হস্তা (সস্তা)। আমরা গরিবের ফল হিসাবেই (হিসেবেই) তরমুজরে চিনতাম। অহন তো এইট্যা (এখন এটি) গরিবের ফল না।’
‘ভাই এই তরমুজ নেন, এটা ভেতরে লাল হবে’ ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে হাঁক দিচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আব্দুর রাশেদ (৪৫)। ওজন মেপে ৫ কেজি ওজনের একটি তরমুজের দাম বললেন ৩০০ টাকা। ক্রেতা আকস্মিক তার সঙ্গে বসচায় জড়ালেন।
এতোদিন সিজনে দাম কম ছিলো, এখন দাম চড়া কেন? শেষতক রাশেদের দামেই জিভ সামলাতেই রসালো ফল নিয়ে ছুটতে হলো তাকে।
তরমুজ ব্যবসায়ী আব্দুর রাশেদ বাংলানিউজকে জানান, আড়ৎ থেকে তিনগুণ দামে তরমুজ কিনতে হচ্ছে। গড়ে প্রতিটি তরমুজ কিনেছেন ২২০ টাকায়। সেই হিসেবে ১০০ তরমুজ কিনতে গড়ে ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এজন্য খরচ পুষিয়েই আমাদেরও তরমুজ বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাশেদের পক্ষেই সাফাই গেয়ে পাশের তরমুজ ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ওজন করে তরমুজ বিক্রিতে লোকসান দিতে হয়। কারণ তরমুজের মধ্যে ছোট বড় থাকে। এখন যদি কোনোটি সাইজে ছোট হয় তাহলে ওজন কমে যায়। সেক্ষেত্রে চালানে ২০ থেকে ২৫ টাকা লোকসান হয়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply