দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে শুধু চোখে পড়ে রসুন আর রসুন। মাঠ থেকে রসুন তুলে রাখা হয়েছে বস্তা ভরে । বাম্পার ফলন হলেও দাম নেই বললেই চলে। বস্তা প্রতি রসুন মাত্র ৮০০/- টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ।
কৃষকরা এবারের রসুন চাষে উৎপাদন খরচের থেকে প্রায় ৩ গুণ অধিক লোকসান গুনছেন । চিরিরবন্দরের রসুনের মাঠ গুলোতে এমন অবস্থা দেখে মনে হয় কোনো উৎসব শুরু হয়েছে । উপজেলার দিগন্ত মাঠে শুধুই রসুনের শ্রমিক। কেউ রসুন তুলছে, কেউ রসুনের গাছ কাটছে, এছাড়া কেউবা রসুন শুকানো হলে বস্তা করছে বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য । বিশ্রাম নেওয়ার মতো ফুসরত নেই কৃষক-শ্রমিকদের। এমনকি বহিরাগত নারী শ্রমিকরাও হাত দিয়েছেন রসুন উঠানোর কাজে।
চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা, বিন্যাকুড়ি, নশরতপুর, ফতেজংপুর, সাইতাড়া,আলোকডিহি তেতুঁলিয়া ও ভিয়েল গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত মৌসুমের শুরুতে রসুনের দাম ভালো ছিল। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছরও এ এলাকার কৃষকরা ব্যাপকহারে রসুন আবাদ করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে রসুনের ভালো দাম উঠায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে রসুনের চাষাবাদ করা হয়েছে। এ বছর ৩ শত’ ৪৭ হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রসুন চাষ হয়েছে ৬ শত’ ৮০ হেক্টর জমিতে। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কৃষকের পাশাপাশি অনেক দিনমজুর রসুন চাষ করেছেন বেশী লাভের আশায়। দেখা গেছে, গত বছরে রসুনের দিগুন দাম যাওয়ায় এ বছর অনেক কৃষক এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে রসুন চাষ করেছে। এতে করে কৃষক ব্যাপক হারে ক্ষতির সমক্ষীন হচ্ছে।
রসুন চাষী মোসলেম জানান, “১একর জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, বপন, হাল চাষ, নিড়ানি ও অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, উৎপাদন হয়েছে একর প্রতি প্রায় ১শ ৪০ মণ। যার বর্তমান বাজার মূল্য মাত্র ৫৬ হাজার টাকা। উৎপাদন ও আনুসাঙ্গিক খরচ দিয়ে লোকসানের পরিমান প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকার মত।”
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাহমুদুল হাসান জানান, “উত্তরবঙ্গে কৃষি শস্য ভাণ্ডার হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে বৃহত্তর চিরিরবন্দর উপজেলা। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রসুনক্ষেতে কোনো ধরনের ইনজুরি কিংবা অন্যান্য রোগের আক্রমণ কম হওয়ায় ফলন বেশী হলেও গত বছরের তুলনায় রসুনের দাম এ বছর অনেক কম।”
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / ক.আ।
Leave a Reply