জয়পাড়া, রাইপাড়া, সুতারপাড়া ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের আংশিক নিয়ে ২০০০ সালে গঠিত হয় দোহার পৌরসভা। ভোটার তালিকা ও সীমানা জটিলতার কারণে দীর্ঘ ১৯ বছর আটকে থাকা রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী দোহার পৌরসভার নির্বাচন আগামী ৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশ প্রদান করেন। পৌরসভা নিয়ে দায়েরকৃত মামলার বাদীরা তাদের মামলা তুলে নেয়ায় উচ্চ আদালত এ আদেশ প্রদান করে।
অন্য কোন জটিলতা না থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দোহার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান।
দোহার পৌর নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর, সীমানা জটিলতা, কতিপয় দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধি এবং অভ্যন্তরীণ বিভেদে লিপ্ত কতিপয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে দীর্ঘ ১৯ বছর ঢাকার দোহার পৌর নাগরিকগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালে দোহার পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর, নির্বাচনের ৩ দিন পূর্বে চরলটাখোলা গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে আব্দুস সোবাহান পৌর এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। আব্দুস সোবাহান বলেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তিনি মামলা তুলে নিয়েছেন।
এছাড়া কাঠালিঘাটা গ্রামের মৃত ফায়জদ্দিন বেপারীর ছেলে মজিবর রহমান ভোটার তালিকা ও পৌরসভার সীমানা নিয়ে মামলা করায় দোহার পৌরসভা নির্বাচনের পথে এগিয়ে যেতে পারেনি বলে পৌরবাসীদের অভিযোগ।
দক্ষিণ জয়পাড়া এলাকার মাঝিপাড়া গ্রামের অধিবাসী মো. আবু বক্কর বলেন, প্রায় ১৯ বছর নির্বাচন হয় না। ফলে মেয়রসহ কাউন্সিলরদের মধ্যে এখন আর সেবার মনোভাব নেই।
কৃষক শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, নামেই প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কগুলোতে পানি জমে থাকছে। কাঁদা ও পানি জমে থাকায় স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে নানান বিড়ম্বনায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ ৩ মাসের মধ্যে পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে বলেন, দীর্ঘ ১৯ বছর পর নির্বাচন হবে এটা শুনে ভালোই লাগছে। অযোগ্য লোক নয় বরং যোগ্য লোক পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিসহ এলাকার উন্নয়ন করতে পারে।
দোহার পৌরসভার নারী কাউন্সিলর জামিলা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন জনসেবা করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি আবার প্রার্থী হবেন বলে জানান।
পৌরসভার বর্তমান মেয়র আলহাজ আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, পৌর এলাকার সীমানা নিয়ে আমার জানামতে ৪টি মামলা হয়। যথাসময়ে নির্বাচন হলেও বয়স হয়েছে। এখন আর ভালো লাগে না। প্রতি অর্থবছরে লোক দেখানো কোটি কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হলেও বাস্তবের সঙ্গে তার কোন মিল নেই। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি দেখানো হয়। জনগণ পৌরসভার সাথে থাকতে চায় না। তারা নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করে না। আমি তাহলে কিভাবে উন্নয়ন করবো।
দোহার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশের কপি গত ৭ আগস্ট আমরা হাতে পেয়েছি। নির্দেশ হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply