নাটোরের সিংড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম তিরাইলে একটি হত্যা মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় এবং বাদীর সাথে আপোস করার চেষ্টার অভিযোগ এনে আট কৃষক পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের প্রায় ৫শ’ বিঘা জমির ধান কাটতে দিচ্ছে না মামলার অপর আসামীরা। প্রভাবশালীদের হুমকি ধামকির ফলে জীবন বাঁচাতে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে কৃষক পরিবারগুলো সিংড়া থানায় অভিযোগ করলেও এখনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২২ শে আগস্ট সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের আগ তিরাইল পশ্চিম পাড়া গ্রামের আব্দুল হান্নানকে হত্যা করে দুবৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহত হান্নানের ভাই আকরাম আলী বাদি হয়ে ১৮জনকে অভিযুক্ত করে সিংড়া থানায় মামলা করেন। আগ তিরাইল পূর্ব পাড়া গ্রামের মাহাতাব উদ্দিন মাস্টার ও তার ছেলে মজনু এবং ভাতিজা ভট্টু সরদারকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয় মামলায়। মামলার স্বাক্ষী করা হয় আইযুব আলী সহ আগ তিরাইল গ্রামের আরোও পাঁচ পরিবারের সদস্যদের ।
এ ঘটনার পর ওই আট জনের বাড়িতে কেউ যেন কাজ না করে ও কোন প্রকার সম্পর্ক না রাখে সে জন্য চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর বিকেলে পূর্বপাড়া মসজিদের মাইকে মাইকিং করা হয়।
তিন কৃষক পরিবারের আত্মীয়-স্বজনকেও রাস্তা দিয়ে হাটতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে জমির ধান কাটতে না পারায় অনেক ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। ধানগুলো খাওয়ানো হচ্ছে গবাদি পশু ও হাঁস দিয়ে। হুমকির মুখে মাহাতাব উদ্দিন মাস্টার ও তার ছেলে মজনু, ভাতিজা ভট্টু সরদার এবং স্বাক্ষী আইয়ুব আলী সহ অন্যন্য স্বাক্ষীরা গ্রাম থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারে মহিলা ছাড়া আর কোন সদস্য নেই ।
হাঁটতে না দেওয়া ও হুমকির দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা। তবে তারা ক্যামেরার সামনে এ বিষয়ে আর কোন কথা বলতে চাননি।
ভুক্তভোগী মাহতাব আলী মাস্টারের আত্মীয় আইয়ুব আলী সরদার অভিযোগ করেন, গত ৩০ অক্টোবর সিংড়া থানায় জিডি করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি পুলিশ। তারা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ ব্যাপারে সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। গ্রামের একঘরে পরিবারগুলোর নিরাপত্তা দানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা যেন নির্বিঘ্নে ধান কাটতে পারে সে ব্যাপাারে সহযোগিতা করা হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply